OLED এবং LED LCD প্রযুক্তি দুনিয়ার জনপ্রিয় কিছু শব্দ। এরা হচ্ছে ডিসপ্লের ধরন। মনিটর, টিভি, মোবাইল ফোন, ক্যামেরাতে এ ধরনের ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
LED এর পূর্ণরূপ হচ্ছে light-emitting diode। এ ধরনের ডিসপ্লে বাজারে বেশ প্রচলিত। LCD এর পূর্ণরূপ হচ্ছে liquid crystal display। OLED এর পূর্ণরূপ হচ্ছে organic light-emitting diode যা দামী স্মার্টফোনের পাশাপাশি টিভিতে ব্যবহৃত হয়।
LCD ও OLED এর পার্থক্য
সংক্ষেপে, LED-LCD ব্যাকলিট প্রযুক্তির সাহায্যে স্ক্রিনকে আলোকিত করে। OLED-এর পিক্সেলগুলি তাদের নিজস্ব আলো তৈরি করতে সক্ষম তা LCD প্রযুক্তির দ্বারা সম্ভব হবে না। একটি OLED ডিসপ্লের আলো পিক্সেল এর অনুপাত অনুসারে নিয়ন্ত্রণ করা হয় । LED-LCD অন্য ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে যা OLED এর সাথে মিলবে না।
LED-LCD এর লাইটগুলি ডিসপ্লে এর এক সাইডে বসানো থাকে। ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির মাধ্যমে লাল, নীল ও সবুজ আলোর মাধ্যমে আলো ছড়িয়ে যায়।
উজ্জ্বলতা
LED-LCD স্ক্রিন OLED এর চেয়ে উজ্জ্বল হতে পারে। টিভি জগতে এটি একটি বড় ব্যাপার, তবে স্মার্টফোনগুলির জন্য আরও বেশি, যা প্রায়শই বাইরে এবং উজ্জ্বল সূর্যের আলোতে ব্যবহৃত হয়। আশেপাশের পরিবেশের আলো বেশি হলে ডিসপ্লের ব্রাইটনেস বেশি থাকতে হয়। স্মার্টফোন প্রায় সময় সূর্যের আলোতে ব্যবহৃত হয়। উচ্চতর রেজুলেশনে ভিডিও দেখতে হলে আলো বেশি থাকা দরকার হয়। উজ্জ্বলতার মাত্রা যত বেশি, চাক্ষুষ প্রভাব তত বেশি।
কন্ট্রাস্ট
LED-LCD মনিটরে কন্ট্রস্ট এর অনপাত ১০০০:১ ব্যবহার করা হয়। মানে সাদা আলো কালো থেকে ১০০০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। অন্ধকার পরিবেশে LED-LCD মনিটর এর সাইডে হালকা আলো দেখতে পাওয়া যায়। তবে OLED ডিসপ্লের পিক্সেল অন্ধকারে কোনো আলো উৎপন্ন করে না। অন্ধকার পরিবেশে ছবি বা ভিডিও দেখার জন্য OLED ডিসপ্লে LED-LCD মনিটর থেকে অনেক এগিয়ে থাকবে।
কৌণিক দৃষ্টিকোণ
LCD-তে দেখার কোণগুলি সাধারণত খারাপ হয়, তবে এটি ব্যবহৃত ডিসপ্লে প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এবং LCD প্যানেল বিভিন্ন ধরনের প্রচুর আছে.
OLED প্যানেলের কৌণিক দূরত্বভিত্তিক পারফরম্যন্স দুর্দান্ত। আপনি ঘরের যেকোন জায়গা থেকে ভিডিও উপভোগ করতে পারবেন। ডিসপ্লে আপনার মুখ বরাবর হওয়ার প্রয়োজন নেই। পর্যাপ্ত আলোও প্রদান করবে। LCD এইক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে আছে। আপনি ঘরের যেকোন জায়গা থেকে সহজে উপভোগ করতে পারবেন না। কম দামী স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এ TN প্যানেল ব্যবহার করা হয় যার পারফরম্যান্স সবচেয়ে খারাপ। তবে LCD এর IPS প্যানেল বেশ জনপ্রিয়। রঙের ব্যবহার ও কৌণিক দূরত্বভিত্তিক পারফরম্যান্স বেশ ভালো।
রঙ
সর্বশেষ এলসিডি স্ক্রিনগুলি চমৎকার প্রাকৃতিক-সুদর্শন রঙ তৈরি করতে পারে। তবে ব্র্যান্ডভেদে ও ব্যবহৃত নির্দিষ্ট প্রযুক্তির উপর বিষয়টি নির্ভর করে।
সঠিকভাবে ক্যালিব্রেট করা হলে IPS নির্ভর ডিসপ্লে সুন্দর রঙ প্রদান করে। অন্যদিকে TN নির্ভর স্ক্রিনগুলির রঙ এর বৈশিষ্ট্য সুন্দর না। প্রথমদিকের OLED প্যানেলে রঙ প্রাণবন্ত ছিলো না। তবে বর্তমানে এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। উজ্জ্বলতা ও কালার স্যাচুরেশনের দিক থেকে LCD এগিয়ে থাকবে।
ডিসপ্লে নির্মাতারা LCD এর বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা দূর করার ও আরও উন্নত করার জন্য তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে, যখন OLED আরও সাশ্রয়ী এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে স্যামসাং এর OLED ব্র্যান্ডের টিভি সবথেকে বেশি জনপ্রিয় ও তারা বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল Samsung এর QLED ব্র্যান্ডের টিভি ও তারা Quantum Dot প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
পূর্বে বলা হতো LCD, OLED থেকে ভালো করছে, তবে এখন এ কথা এখন আর নিশ্চিত করে বলা যায় না। LED-LCD দামে সস্তা হওয়ায় অনেক বেশি সময় ধরে চলছে। তবে OLED এর দাম দিন দিন কমতে শুরু করেছে। আলো ও অন্ধকারে পিক্সেল নির্ভুলভাবে কাজ করে। রিফ্রেশ রেট দুর্দান্ত ও প্রসেসিং ক্ষমতা প্রশংসনীয়। গেমিং ডিভাইসে OLED এর ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনি LED নাকি OLED প্যানেল ব্যবহার করবেন এটা আপনার উপর নির্ভর করবে। তবে উভয় ডিসপ্লে তাদের জায়গায় সেরা। আপনার অগ্রাধিকার কি কি এবং বাজেট কেমন সেটা বুঝে আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন কোন ধরনের ডিসপ্লে আপনি কিনবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।