লাইফস্টাইল ডেস্ক : সাধ আর সাধ্যের টানাপোড়েনে থাকতে হয় অনেককেই। গরমে বাসার শিশু কিংবা প্রবীণ ব্যক্তিটির যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, তখন সাধ্যের সঙ্গে একটা বড় সমঝোতায় যেতে হয়। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি এখন ঘরে প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কিন্তু সামর্থ্য বিবেচনায় এসি ব্যবহার করা থেকে পিছিয়ে আসেন অনেকে। কারও আবার বাড়ির একাধিক ঘরে এসি প্রয়োজন, সাংসারিক বাজেট উতরে কিনতে পারছেন না এসি। এমন পরিস্থিতিতে চাইলে পুরোনো এসিই হতে পারে সমাধান। একটু দেখেশুনে যাচাই করে কিনলে অনেক দিন ব্যবহার উপযোগী এসি পেয়ে যাবেন।
‘আমি আমার নিজ বাসায় সন্তানদের নিয়ে এসিতে বসবাস করি। আমার বৃদ্ধ মা-বাবা গরমে কষ্ট পান। যেহেতু আমি একটা মোটামুটি বেতনের চাকরি করি, তাই নতুন এসি কেনার বাজেট বের করা মুশকিল। তাই ফেসবুকের একটা গ্রুপ, যেখানে পুরোনো ইলেকট্রনিকস পণ্য বেচাকেনা হয়, সেখান থেকে অর্ধেক দামে একটি এসি কিনি। বিক্রেতা এক বছর ব্যবহার করেছেন। এসিটি কেনার পর থেকে তিন বছর ধরে কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই সুন্দর সেবা দিচ্ছে।’ পুরোনো এসি কেনা ও ব্যবহারের অভিজ্ঞতা নিয়ে এমনটাই বললেন আঞ্জুমান আরা। তিনি একটা বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক অনেক গ্রুপ এখন অনলাইনেই পুরোনো ইলেকট্রনিকস পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে। আঞ্জুমান আরার মতো একটু চোখ–কান খোলা রাখলে আপনিও কমিয়ে আনতে পারবেন সাধ আর সাধ্যের মধ্যে দূরত্ব। বিভিন্ন ওয়েবসাইটও আছে যারা এমন পণ্য বিক্রি করে।
অনলাইন দুনিয়ার বাইরে আত্মীয়-পরিচিতজনেরাও অনেক সময় তাঁদের স্বল্প ব্যবহৃত এসিটি বিক্রি করে দেন। তাঁদের কাছ থেকেও সেগুলো কম দামে কিনে নিতে পারেন। এর সঙ্গে আছে এলাকার ইলেকট্রনিকসের দোকানগুলো। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় দেশব্যাপী অনেক ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠানের ‘এসি এক্সচেঞ্জ অফার’। এর আওতায় যেকোনো ব্র্যান্ডের ব্যবহৃত এসি বদলে নতুন এসি নেওয়ার সুযোগ থাকে। এসব অফার থেকে মানসম্মত এসি পেয়ে যেতে পারেন। পাশাপাশি রাজধানীসহ জেলা শহরের সব ইলেকট্রনিকসের দোকানেও মিলতে পারে সাধ্যের মধ্যে পুরোনো এসি।
রাজধানীতে যাঁরা পুরোনো এসির খোঁজে আছেন, তাঁরা চলে যেতে পারেন গুলশান-১-এর গুলশান শপিং সেন্টারে। এখানকার নিচতলায় পুরোনো এসির বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে। কয়েকটি দোকান ঘুরে জানা গেল, বিক্রেতারা ১ টন কেরিয়ার এসি বিক্রি করছেন ১৭ হাজার টাকায়। জেনারেলের ১ টনের এসি ১৮ হাজার টাকা, যা সর্বোচ্চ পাঁচ মাস ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রি–এর এসি ১ টন ১৫ হাজার টাকা ও ২ টন ২০ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।
গুলশান শপিং সেন্টারের পুরোনো এসির দোকানের এক বিক্রেতা আবদুল গণির কাছ থেকে জানা যায়, তাঁদের দোকানে থাকা এসিগুলোর বেশির ভাগই স্বল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। বিদেশি যাঁরা বিভিন্ন কাজে বাংলাদেশে আসেন, মাসখানেক কিংবা দুই-তিন মাস থাকেন এখানে, তাঁরা চলে যাওয়ার পর এই এসিগুলো গুলশান মার্কেটে বিক্রি করা হয়। পরে এগুলো দোকানদারেরা মেরামত করে বিক্রি করেন। তাই অল্প দামেই যাঁরা ভালো মানের এসি খুঁজছেন, তাঁরা দেখেশুনে এখান থেকে এসি কিনতে পারেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বসবাসরত সরকারি কর্মজীবী আরিফুজ্জামান নিজ বাসার জন্য গুলশান–১ থেকে পুরোনো এসি কিনেছেন। আরিফুজ্জামান বলেন, ‘আমার মেয়ে বড় হওয়ার পরে ওকে আলাদা কক্ষে থাকতে দিই। এসিতে ঘুমিয়ে মেয়ের অভ্যাস। কিন্তু সেই মুহূর্তে আমাদের কাছে নতুন এসি কেনার টাকা ছিল না। তাই পুরোনো এসি কিনে ঘরে ওর রুমে সেট করি। ভালোই সার্ভিস দিচ্ছে। সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে যাঁরা এসি কেনা থেকে পিছিয়ে আসেন, তাঁরা চাইলেই এমন স্বল্প ব্যবহৃত এসি কিনতে পারেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।