‘একেকটি সিলিন্ডার, একেকটি বোমা’

পেট্রেলিয়াম গ্যাস

জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েটের অধ্যাপক মাকসুদ হেলালি বলেছেন, প্রোপ্রেন ও বিউটেনের সংমিশ্রণে তৈরি হচ্ছে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রেলিয়াম গ্যাস), যা মারাত্মক দাহ্য। এটাই বাজারে পাওয়া যায়। যা খুবই বিপদজনক। তার মতে, ‘একেকটি সিলিন্ডার একেকটি বোমা।’

পেট্রেলিয়াম গ্যাস

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ‘হোটেল-রেস্তোরায় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে একথা বলেন বুয়েটের অধ্যাপক মাকসুদ হেলালি।

তিনি বলেন,
দেশে যারা সিলিন্ডার ব্যবহার করেন, তাদের ৯০ শতাংশ গৃহিণী। তারা জানেন না সিলিন্ডার কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। একটি সিলিন্ডারের রেগুলেটর কী; কীভাবে প্রেশার চেক করতে হয় বা লিক হলে কীভাবে বুঝবে, সেটির কোনো উপায় তাদের জানা নেই।

কাজেই এলপিজি ব্যবহারে সঠিক নির্দেশনা প্রণয়নের সময় এখনই- এমন মন্তব্য করেন বুয়েটের এই অধ্যাপক।

তিনি আরও বলেন,
সিলিন্ডার আপনাআপনি ব্লাস্ট হয় না। মূলত সিলিন্ডারের তাপমাত্রা থাকা উচিত সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে কোনো কারণে যদি সিলিন্ডারের তাপমাত্রা বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি হয়, তখন বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

সেক্ষেত্রে চুলার পাশে সিলিন্ডার রেখে রান্না করলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে মাকসুদ হেলালি বলেন, অথচ এ দেশের প্রায় প্রতিটি ঘরেই চুলার পাশে সিলিন্ডার রেখে রান্না করা হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেসব চুলা তৈরি করা হয়, যেসব সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়, সেখানে আন্তর্জাতিক কোনো মানদণ্ড ব্যবহার করা হয় না। পাশাপাশি কোনো মেয়াদও মানা হয় না।

এদিকে এলপিজি লিক করলে এক ধরনের গন্ধ বের হয়, মূলত এই গন্ধটি চিনতে হবে বলে জোর দিয়েছেন বুয়েটের এই অধ্যাপক।
তিনি বলেন, সিলিন্ডারে এলপিজি লিকেজ হলে চুলায় কালি পড়বে। এসব লক্ষণ না চিনলে বড় বিপদ ঘটবে।

এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) লিক করলে সেটি বাতাসে মিশে যায়- এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, অথচ এলপিজি ভারি হওয়ায় এটি নিচের দিকে যায়। তাই এটি লিক করলে ভেন্টিলেটর দিয়ে বাইরে না গিয়ে ঘরের মধ্যেই অবস্থান করে এবং দুর্ঘটনা ঘটায়।

সিলিন্ডারের তাপমাত্রা থাকা উচিত সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে কোনো কারণে সিলিন্ডারের তাপমাত্রা বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি হলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের অধ্যাপক মাকসুদ হেলালি। ফাইল ছবি

তিনি আরও বলেন, কাজেই অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, রান্নার সময় তেলে আগুন লেগে হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে, যদি সিলিন্ডার পাশে থাকে। আবার ভাত বা পানি উথলে পড়লে চুলা নিভে যায় কিন্তু এলপিজি গ্যাস বের হতে থাকে। তখন দেশলাই জ্বালালে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

সেক্ষেত্রে বাজারে যেসব এলপিজি সিলিন্ডার আসছে, এদের গাঠনিক উপাদান যা ব্যবহার হচ্ছে তা আইনবহির্ভূত মন্তব্য করে তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন।