আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মতো উচ্চ বেতন দেওয়া সত্ত্বেও করোনা মহামারির পর থেকে সুইজারল্যান্ড উল্লেখযোগ্য শ্রম ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে।
সুইস এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইউপিএস)-সহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতির পেছনে প্রধান কারণ জনসংখ্যাগত পরিবর্তন। প্রতি বছর ইউরোপে কর্মচারীর সংখ্যা হ্রাসের পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্তদের তুলনায় কম তরুণ-তরুণী শ্রমবাজারে যোগ দিচ্ছে।
সুইজারল্যান্ডে শ্রম ঘাটতির আরেকটি কারণ হলো– অর্থনীতির বৃদ্ধি, যেখানে এখন ২০ বছর আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি লোক প্রয়োজন। এর ফলে বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও কেটারিং খাতে শ্রমিকের বড় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ম্যানপাওয়ার রিপোর্ট অনুসারে, সুইজারল্যান্ডে বর্তমানে প্রায় ১ লাখ শূন্যপদ রয়েছে।
এ প্রয়োজন মেটাতে বেশ কিছু সমাধান প্রস্তাব করা হয়েছে। সুইস বিশেষজ্ঞরা এই শূন্যতা পূরণে বিদেশি শ্রমিক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। ইউএনআইএ ট্রেড ইউনিয়ন সুইস অর্থনীতির জন্য কর্মী নিয়োগের ওপর জোর দিয়েছে এবং নতুন আগতদের প্রশিক্ষণে নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
পেশাদার সেক্টরের বিশেষজ্ঞ সুইস কর্মচারীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, যদি ২০২৫ সালের মধ্যে শ্রম নিয়োগের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এটির জন্য প্রায় ৬০ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক খরচ হতে পারে। আয়তনে প্রায় ৪১,২৮৫ বর্গকিলোমিটারের দেশ সুইজারল্যান্ডের বর্তমান জনসংখ্যা ৮৯ লাখ ৬১ হাজার। দেশটির চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার হ্রাস একটি অন্যতম সমস্যা।
সুইস এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ইউনিয়নগুলোও ঘাটতি মোকাবিলায় সমাধানের প্রস্তাব করে বলেছে, বিদেশি ডিপ্লোমার স্বীকৃতির সুবিধা, যা বিদেশিদের সুইস শ্রম বাজারে যোগদান করতে এবং এই অপ্রতুলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। ইউনিয়নগুলো মনে করে মহিলাদের জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত করা, তাদের আরও বেশি নিয়োগ ও শূন্যস্থান পূরণ করার অনুমতি দেওয়া এ সমাধানের একটি চাবিকাঠি হতে পারে। আরেকটি প্রস্তাবে বলা হয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো ও আমলাতন্ত্র হ্রাস করা অত্যন্ত জরুরি।
অন্যদিকে বিভিন্ন মেডিকেল কোম্পানি সুইজারল্যান্ডে কর্মী ঘাটতি মোকাবিলায় আরও ভালো পেশাদার প্রশিক্ষণের আহ্বান জানিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন কোম্পানি নিয়োগের সময় ডাক্তারদের কঠোর পরীক্ষার সমালোচনা করেন। পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি এড়াতে ও নিজস্ব খাতে উন্নতি করতে প্রস্তাবিত আকর্ষণীয় বেতন সত্ত্বেও সুইস শ্রমবাজারে পরিবর্তন প্রয়োজনীয় বলে তারা মনে করেন।
এ পরিস্থিতিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য সুইজারল্যান্ড হতে পারে একটি আকর্ষণীয় শ্রম বাজার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।