জুমবাংলা ডেস্ক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায় এক ও দুই টাকার মুদ্রা চলে না। ফলে খুচরা লেনদেনে বিপাকে পড়ছেন দুই জেলার মানুষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলেই। এমনকি ভিক্ষুকরাও এক-দুই টাকার মুদ্রা নেন না। স্থানীয় ব্যাংকগুলো এসব মুদ্রা না নেওয়ার কারণে অচল হয়ে পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
তবে বিষয়টিকে ‘গুজব’ বলছেন স্থানীয় ব্যাংগুলো। সরকার অনুমোদিত সকল নোট ও মুদ্রা নিতে ব্যাংকগুলো বাধ্য বলেও জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে বিষয়টি সমাধানে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যাংকগুলো।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, ইবি পার্শ্ববর্তী বাজারগুলো ও ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ দোকানগুলোতে বিক্রেতারা ১ ও ২ টাকার কয়েন নিচ্ছেন না। এতে ৪, ৯ ও ১৪ টাকার মতো খুচরা কেনাকাটা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা। হয়তো দোকানিকে বেশি দিতে হচ্ছে নয়তো বাকি রাখতে হচ্ছে। অন্যথায় টাকার পরিবর্তে লজেন্স ও সমপরিমাণ টাকার পণ্য নিতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়নিংগুলোতে ২২, ২৮ ও ৩৮ টাকার খাবার কিনলে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। মাঝে মাঝে ২ টাকা বাকি ও ২ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে খেতে হয় তাদের। খুচরা টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী ও ডাইনিং ম্যানেজারদের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর মতো ঘটনাও ঘটে।
এদিকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের স্থানীয় ব্যাংকগুলো এসব ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্যাম্পাসের দোকানদারদের। তারা জানান, ৫ বছর আগেও এসব মুদ্রা সচল ছিল। স্থানীয় ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের থেকে এসব ধাতব মুদ্রা না নেওয়ার কারণে অচল হয়ে পড়েছে। এজন্য ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়ই এগুলো দিয়ে লেনদেন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
অগ্রণী ব্যাংক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন বলেন, ব্যাংকে ২৫ পয়সার কয়েন নিয়ে আসলেও নিতে বাধ্য। এ অঞ্চলে কেন এসব মুদ্রা ব্যবহার হচ্ছে না, তা জানি না।
সোনালী ব্যাংক শেখপাড়া শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের মাঝে-মধ্যে কয়েন প্রয়োজন পড়লে, বাজারে গিয়ে খোঁজ করতে হয়।
সোনালী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার সহকারী ব্যাবস্থাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, এটা ব্যাংকের কোন সমস্যা নয়। ব্যাংক সরকার অনুমোদিত সকল মুদ্রা নিতে বাধ্য। মূলত বাজারকে কয়েন সংকটে ফেলছে কিছু সিণ্ডিকেট চক্র। তারাই এসব গুজব ছড়াচ্ছেন। প্রশাসনের উচিত আগে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা।
এদিকে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মুদ্রার মূল্যমান কমে যাওয়ার ফলে এসব কয়েন দিন দিন অচল হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুঈদ রহমান।
তিনি বলেন, মানুষ এখন এসব কয়েন অপ্রয়োজনীয় মনে করছেন, ফলে এগুলোর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। কারণ, পাঁচটি পাঁচ টাকার কয়েন ধারণ করার চেয়ে একটি ২০ টাকার নোট ব্যবহার খুবই সহজ। তাই মানুষ সহজটি গ্রহণ করছে। তাছাড়া প্রত্যেক ব্যাংক এগুলো নিতে বাধ্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।