জুমবাংলা ডেস্ক : ভূমি মালিকদের জন্য এসেছে দারুণ এক সুসংবাদ! এখন থেকে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন অনুসারে জমি সংক্রান্ত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে সরাসরি জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় থেকে—আদালতে মামলা না করেই।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোনো ভূমি মালিকের কাছে মালিকানা প্রমাণের জন্য কমপক্ষে একটি বৈধ দলিল (যেমন: দলিল, খতিয়ান, বাটোয়ারা দলিল বা খাজনার রসিদ) থাকে, তাহলে তিনি নিচের পাঁচটি সমস্যার সমাধানের জন্য ডিসি অফিসে আবেদন করতে পারবেন।
ডিসি অফিসের মাধ্যমে সমাধানযোগ্য ৫টি জমি সমস্যা:
১. জবরদখলের অভিযোগ
যদি কোনো ব্যক্তি কারো ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়, তবে ভূমি মালিক আদালতে না গিয়েই ডিসি অফিসে আবেদন করে জমির দখল পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরেজমিন তদন্ত করবেন এবং তিন মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে।
২. ওয়ারিশি সম্পত্তির অনিয়মিত বণ্টন
যদি কোনো ওয়ারিশ বাটোয়ারা দলিল ছাড়া জমি দখল করে নেয় বা অন্য ওয়ারিশকে ঠকায়, তাহলে আদালতের আশ্রয় না নিয়েই ডিসি অফিসে অভিযোগ করা যাবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে বিস্তারিত তদন্ত করবেন।
৩. খতিয়ানে ভুল বা সরকারি খতিয়ানভুক্তি
যদি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো জমি ভুলবশত সরকারি খতিয়ানে চলে যায়, তাহলে মালিক ডিসি অফিসে আবেদন করে তা সংশোধনের অনুরোধ করতে পারবেন। সার্ভেয়ারের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।
৪. চলাচলের রাস্তা বন্ধ হওয়া
যদি কেউ জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা হঠাৎ বন্ধ করে দেয় এবং বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকে, তাহলে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ঐ রাস্তা পুনরায় উন্মুক্ত করা যাবে।
৫. অবৈধ খাল খনন বা জমি ভরাট
যদি অনুমতি ছাড়া খাল খনন বা জমি ভরাটের মাধ্যমে অন্যের জমিতে ক্ষতি হয়, তাহলে মালিক ডিসি অফিসে অভিযোগ করতে পারবেন। তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
কিভাবে আবেদন করবেন?
ডিসি অফিসে আবেদন করতে হলে নিচের নিয়ম অনুসরণ করতে হবে:
- একটি লিখিত আবেদনপত্র প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
- আবেদনপত্রের সঙ্গে জমির দলিল, খতিয়ান, খাজনার রসিদ বা বাটোয়ারা দলিলের কপি সংযুক্ত করতে হবে।
- ডিসি অফিস প্রাথমিকভাবে যাচাই করবে এবং প্রয়োজনে তদন্ত ও শুনানির আয়োজন করবে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
যদিও আইনে এসব পরিষ্কারভাবে উল্লেখ আছে, বাস্তবে সব জেলার ডিসি অফিসে এই সেবার প্রাপ্যতা সমান নয়। অনেক জেলা প্রশাসন এই নিয়ম কার্যকর করার চেষ্টা করছে, তবে জনবল ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ।
পরামর্শ:
- জমি সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার ক্ষেত্রে প্রথমেই একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
- আপনার জমি সম্পর্কিত সকল বৈধ কাগজপত্র প্রস্তুত করে রাখুন।
- তারপর নির্দিষ্ট নিয়মে ডিসি অফিসে আবেদন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।