বিনোদন ডেস্ক : অবসাদ একটি মানসিক রোগ। যা তিলে তিলে মানুষকে ভেতর থেকে শেষ করে দেয়। সাধারণত টাকা-পয়সার অভাব, না পাওয়ার যন্ত্রণা, প্রেম-বিরহ নানা কারণে অবসাদ এসে মানুষকে ঘিরে ধরে। অবসাদে ভুগে একসময় আত্মহত্যার মতো কঠিন সিদ্ধান্তও নেন অনেকে।
তবে অর্থ-বিত্ত আর আলোর ঝলকানির মাঝে থাকলেও যে মানুষের জীবনে অবসাদ আসতে পারে, তার বাস্তব প্রমাণ কিন্তু ভারতের ফিল্ম দুনিয়া। গত কয়েক বছরে খ্যাতির শীর্ষে থেকে সুশান্ত সিং রাজপুতসহ বলিউড-টলিউডের এক ডজনেরও বেশি তারকা আত্মহত্যা করেছেন।
ঠিক তেমনই খ্যাতির শীর্ষে থাকা অবস্থায় চূড়ান্ত অবসাদে ভুগেছিলেন বলিউডের এই সময়ের অন্যতম সুন্দরী ও দামি নায়িকা দীপিকা পাড়ুকোনও। বলিউডে দীপিকার সাফল্য আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। একের পর এক ব্লকবাস্টারের পরও মানসিক অবসাদে ভুগেছেন তিনি। একাধিকবার দীপিকা এ বিষয়ে মুখও খুলেছেন। এমনকি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছেন।
২০২০ সালে সুশান্তের মৃত্যুর পর ইনস্টাগ্রামে মানসিক স্বাস্থ্যের কথাই লিখেছিলেন দীপিকা। তিনি লেখেন, ‘মানসিক সমস্যায় আমিও ভুগেছি। আমি জানি কথা বলাটা কতটা জরুরি। কথা বলুন। নিজেকে প্রকাশ করুন। প্রয়োজনে সাহায্য চান। মনে রাখবেন আপনি একা নন। আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। সব থেকে বড় কথা, সবকিছুর শেষে আশা আছে।’
দীপিকা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘অনেকেই ভুল ভাবেন। ভাবেন, খ্যাতি, অর্থ থাকলে অবসাদ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এটা আসলে একটা ক্লিনিক্যাল কন্ডিশন। এটা কারও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে না।’
তারকা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় প্রকাশ পাডুকোনের কন্যা দীপিকা। অল্প বয়সেই নিজের স্বপ্ন পূরণে পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বাই। প্রথমে মডেলিং এবং পরে অভিনয়ে সফল কেরিয়ার। বলিউডে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা যেতে পারে দীপিকাকে। খ্যাতি, টাকা সবকিছুতেই অনেককে ছাপিয়ে গেছেন তিনি। অথচ সেই মেয়েটিই অবসাদে ভুগেছিলেন।
তখন তিনি খ্যাতির শীর্ষে। হাতে সিনেমার অভাব নেই। হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘরের মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান দীপিকা। বাড়ির পরিচারিকা এসে উদ্ধার করেন তাকে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান তিনি। দেখা যায় তার রক্তচাপ ওঠানামা করছে।
কিছুটা ক্লান্ত লাগতে শুরু করে। বেশ কিছুদিন বাড়িতে ঘুমিয়েই কাটান দীপিকা। কোথাও বের হতেন না, কারও সঙ্গে দেখা করতেন না। ব্যক্তিগত এবং পেশাগত ক্ষেত্রে যখন তার সব থেকে বেশি খুশি থাকার কথা, সেরকম একটা সময়ে অবসাদে ভুগবেন, একথা নিজেও বিশ্বাস করতে পারেননি দীপিকা।
এরপর থেকেই সবকিছু বদলাতে শুরু করে। একা থাকলেই অজানা কষ্টে ভুগতে শুরু করেন নায়িকা। এরপর মুম্বাইতে কিছুদিনের জন্য তার পরিবারের সবাই আসেন। কাউকেই নিজের অবস্থার কথা বুঝিয়ে বলতে পারেননি দীপিকা। যেদিন পরিবারের সবাই চলে যাচ্ছে, সেদিন হঠাৎ কেঁদে ফেলেন তিনি।
যে মেয়ে এত সাহসী, তার চোখে পানি ভাবিয়ে তুলেছিল মা উজ্জ্বলা পাড়ুকোনকে। তার মা-ই সঠিক সময়ে বিষয়টা ধরতে পারেন। তিনিই এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। পারিবারিক বন্ধু সেই চিকিৎসক দীপিকার গলা শুনেই বুঝতে পারেন, এটা ‘ডিপ্রেশন’। এরপরই শুরু হয় চিকিৎসা।
শোনা যায়, দীপিকার অবসাদের অন্যতম কারণ ছিলেন অভিনেতা রণবীর কাপুর। ক্যারিয়ারের সুসময়েই এই নায়কের প্রেমে পড়েছিলেন দীপিকা। তাদের প্রেম ছিল টক অব দ্য কান্ট্রি। কিন্তু ক্যাটরিনার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে দীপিকাকে ত্যাগ করেন রণবীর। তারপরই ডিপ্রেশনে চলে যান দীপিকা।
তবে সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছেন নায়িকা। রণবীর সিংকে বিয়ে করে ছয় বছর ধরে সুখে সংসার করছেন দীপিকা। শোনা যাচ্ছে, তিনি সন্তানের মাও হতে চলেছেন। পাশাপাশি বলিউডে অভিনয়ের ক্ষেত্রেও নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন টানা কয়েক বছর ধরে।
![](https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/03/34-5.jpg)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।