খেলাধুলা ডেস্ক : শনিবার (২৬ এপ্রিল) কোপা দেল রে’র ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলের সমতায় গড়ালে অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ায়। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে জুলস কুন্দের গোলে বার্সার জয় নিশ্চিত হয়। এর আগে নির্ধারিত সময়ে বার্সেলোনার পক্ষে পেদ্রি ও ফেরান তোরেস গোল করেন। রিয়ালের পক্ষে গোল করেন এমবাপ্পে ও চৌয়ামেনি।
অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো খেলায় দুই দুলই টাইব্রেকারের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু নিজেদের অর্ধে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে মদ্রিচ পাস বাড়ালেন ব্রাহিম দিয়াজের দিকে। বলের দিকে এগুতে গিয়ে হোঁচট খেলেন এই মরোক্কান।
ব্যাস! এই সময়টুকুই দরকার ছিল কুন্দের। আকস্মিকভাবেই উদয় হলো তার। ছুঁটে এসে মাটি কামড়ানো জোরাল শট নিলেন। কোর্তোয়া ডাইভ দিয়েও পেলেন না বলের নাগাল। বল জড়াল জালে। আর সেই গোলের শিরোপা নিশ্চিত হলো বার্সার।
চলতি মৌসুমে এটি বার্সার দ্বিতীয় শিরোপা। কোপা দেল রে’র আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও রিয়ালকে হারিয়েছিল বার্সা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে রিয়ালের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে জয় পেল বার্সা। এটি কোপা দেল রে’তে বার্সেলোনার ৩২তম শিরোপা। টুর্নামেন্টটিতে সর্বাধিক সংখ্যক শিরোপা জিতেছে কাতালান জায়ান্টরাই।
আরও পড়ুন: আক্রমণের তোড়ে দিশেহারা রিয়াল, পেদ্রির গোলে লিড বার্সার এস্তাদিও দে লা কারতুজায় প্রথমার্ধে ছিল বার্সেলোনার দাপট। তাদের দাপটে শুরুর দিকে অনেকক্ষণ বলই পায়নি রিয়াল। মাদ্রিদের দলটিকে চিনতে হচ্ছিল জার্সি দেখে।
৪৯ মিনিটে বার্সার এক খেলোয়াড়ের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ডি বক্সে বল বাড়ান বেলিংহ্যাম। ভিনিসিউসের নেয়া শট ঠেকিয়ে দেন সেজনি। ফিরতি বলে ভিনির নেয়া শট ফের ঠেকিয়ে দেন এই পোলিশ গোলরক্ষক।
৫৯ মিনিটে ভিনিসিউসের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কুবারসির পা থেকে বল কেড়ে নিয়েছিলেন মদ্রিচ। পরের মিনিটে কাউন্টার আতাকে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। ৭০ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে গোল করে রিয়াল মাদ্রিদকে সমতায় ফেরান এমবাপ্পে। ফ্রি-কিক থেকে এটিই তার ক্যারিয়ারের প্রথম গোল।
৭৪ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপ্পে। তবে উপুর্যপুরি কর্নার পায় রিয়াল। আর্দা গুলারের নেয়া কর্নার চৌয়ামেনির মাথা ছুঁয়ে জালে জড়ায়। ৮২ মিনিটে ইয়ামালের শট দারুণভাবে রুখে দেন কোর্তোয়া।
৮৩ মিনিটে রুডিগার -কোর্তোয়ার ভুলে গোল খায় রিয়াল। ইয়ামালের লম্বা করে বাড়ানো পাস এগিয়ে এসে ধরতে যায় কোর্তোয়া, কিন্তু ততক্ষণে বলের নাগাল পেয়ে গেছেন ফেরান তোরেস। কোর্তোয়াকে পেছনে ফেলে গোলে শট নেন এই স্প্যানিশ। রুডিগারও দেরি করে ডাইভ দেয়ায় আর বলের নাগাল পাননি।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে রাউলের চ্যালেঞ্জে রিয়ালের ডি-বক্সে পড়ে যান রাফিনিয়া। বার্সেলোনার পেনাল্টির আবেদনে শুরুতে রেফারি সাড়াও দেন। কিন্তু রিয়ালের খেলোয়াড়দের আপত্তির মুখে প্রথমে সেই দাবি নাকচ করে দেন।
এরপর ভিএআরে দেখা যায় রাউলের পা বলে স্পর্শ করেনি। তবে তার পায়ে সেভাবে বাধাও পাননি রাফিনিয়া। ফলে পেনলাটির আবেদন নাকচ করে উল্টো ডাইভ দেয়ায় রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
১০৪ মিনিটে তোরেসের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির পরপরই তোরেস রিয়ালের জালে বল পাঠায়। কিন্তু অফসাইডের কারণে সে গোল বাতিল হয়। ১০৬ মিনিটে ফেরমিন লোপেজের শট অল্পের জন্য গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।
১১৩ মিনিটে গুলারের বাড়ানো ক্রসে বেলিংহ্যাম মাথা লাগাতে পারলেই গোল হতে পারতো, কিন্তু এই ইংলিশ বলের লাইনে পৌঁছাতে পারেননি।
১১৫ মিনিটে জুলস কুন্দের গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। নিজেদের অর্ধে মদ্রিচ ব্রাহিমের উদ্দেশ্যে পাস বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু হোঁচট খেয়ে বলের নাগাল আর পাননি তিনি। হঠাৎ ছুঁটে এসে জোরাল শটে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন কুন্দে।
১১৮ মিনিটে বার্সেলোনার ডি-বক্সে এমবাপ্পে পড়ে যান। কিন্তু অফসাইড হওয়ায় পেনাল্টি পায়নি রিয়াল। ম্যাচের শেষদিকে উত্তেজনা ছড়ায়। রেফারির সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে সাইডলাইনের ওপার থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারায় লাল কার্ড দেখেন রুডিগার ও লুকাস ভাসকেস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।