অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিচার কোন আইনে হবে—সেনা আইন নাকি আইসিটি আইনে—এ নিয়ে কোনো সাংঘর্ষিক অবস্থান আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে সেনাবাহিনীর এ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেছেন, ‘আইসিটি আইন বনাম সেনা আইন—এটা না বলাই ভালো, মুখোমুখি বিষয়টি না বলাই ভালো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল— আইসিটি আইনে বলা আছে যে অভিযোগপত্রে নাম উঠলে চাকরি চলে যাবে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন হলো, অভিযুক্ত কি আসলে সাজাপ্রাপ্ত? সাজা হওয়ার পরও আপিলের সুযোগ থাকে। আপিল নিষ্পত্তির পর যদি সাজা বহাল থাকে, তখনই তাকে সাজাপ্রাপ্ত বলা যাবে। আবার দেখা যাবে, কেউ খালাস পেয়ে গেলেন—তাহলে আইন অনুযায়ী তিনি আবার সার্ভিসে ফিরে যেতে পারবেন।’
মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘অনেকের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে। কেউ মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন, কেউ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন—এসব কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, এই প্রশ্নও আছে।’
সেনাবাহিনীতে চলমান নিয়মের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘কোনো কর্মকর্তার বিচার চলাকালীন সময়ে তার বয়স শেষ হয়ে গেলে তিনি অবসরে যাবেন। তখন খালাস পেলেও তাকে চাকরিতে ফেরানো যাবে না। তাই ট্রাইব্যুনালের আইনের বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চাইব।’
চার্জশিটে নাম থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সেনা আইনে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘গুম সংক্রান্ত একটি জাতীয় কমিশন আছে, যাদের আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি। সেনাবাহিনী আলাদা করে কোনো কমিশন করেনি। বাংলাদেশ আর্মি ন্যায়বিচারের প্রতি অটল—যা ন্যায়সঙ্গত হবে, আর্মি তার পক্ষেই থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গুম কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। আমাদের কিছু কর্মকর্তা হয়তো র্যাব বা ডিজিএফআই-এ ছিলেন, কিন্তু তখন তারা আর্মিতে সক্রিয় দায়িত্বে ছিলেন না। র্যাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, ডিজিএফআই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে। বর্তমানে এটি উপদেষ্টা পরিষদের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।’
অভিযুক্তদের হাজিরা প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল যে নির্দেশ দিয়েছে, সেটি আইন অনুযায়ীই বাস্তবায়ন হবে। আমরা আইনের ব্যাখ্যা চেয়ে তা পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেব।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরো জাতি এখন নির্বাচনমুখী। গত ১৩-১৪ মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন তিনগুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে বলে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঘটনা সেনা সদস্যদের মনোবলে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে, কিন্তু আমরা সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকব।’
নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা করলেই কঠোর ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, পুলিশ চাইলে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। কেউ যদি আমাদের হেফাজতে আসতে চান, সেটিও সম্ভব। তবে অবসরপ্রাপ্তরা সেনা সদর দপ্তরের সরাসরি অধীনে নন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।