জুমবাংলা ডেস্ক : আমাদের সমাজের এক করুণ চিত্র হয়ে উঠা সেন্টু আর আমাদের মাঝে নেই। জীবনের শেষ সময়ে শ্বাসকষ্ট নিয়ে রিকশা চালানো এই বৃদ্ধ সম্প্রতি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার মৃত্যুর খবরটি যেন পুরো সমাজকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।
৫৫ বছর বয়সী ৫৫ বছর বয়সী মাইনুরজ্জামান সেন্টু, যার শ্বাসকষ্ট ছিল প্রতিদিনের সঙ্গী, নাকের মধ্যে অক্সিজেন লাগিয়ে রিকশা চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। তার এই সংগ্রামী জীবন কাহিনী শুনে অনেকেই চোখের জল ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ পেটের দায়ে, জীবিকার তাগিদে, তার জীবন সংগ্রামের শেষ পরিণতি হলো মৃত্যু।
মৃত্যুর আগে, মাইনুরজ্জামান সেন্টুর দুর্বল দেহ অক্সিজেনের পাইপ সহ রিকশা চালানোর করুণ দৃশ্য দেখে পথচারীরা থমকে যেতেন। তার কষ্টময় মুখে একটুখানি সাহায্যের আশায় তাকিয়ে থাকার দৃশ্য অনেকের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু তার এই সংগ্রামের শেষ ছিল মর্মান্তিক।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ সেন্টুর চিকিৎসার সব খরচ বহনের ঘোষণা দেন এবং পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সেন্টুর চিকিৎসার খরচ বহন করা হয়। সেন্টুর থাকার জায়গা না থাকায় তার নামে আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি বরাদ্দ দেন জেলা প্রশাসক। এরপর, পবা উপজেলার বড়গাছিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে স্ত্রী চম্পা বেগমকে নিয়ে বসবাস করা শুরু করেন তিনি।
গত ১৬ দিন আগে হঠাৎ করে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন সেন্টু। তারপরে তাকে রামেক হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে সেন্টুর মৃত্যু হয়।
তার এই করুণ পরিণতি আমাদের সমাজের মানবতার দুর্বল অবস্থার এক নির্মম উদাহরণ। যেখানে একজন বৃদ্ধ শ্বাসকষ্ট নিয়ে জীবিকা অর্জনের জন্য রিকশা চালাতে বাধ্য হচ্ছিলেন, সেখানে তার মৃত্যুর খবর আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, আমাদের সমাজে সহানুভূতি ও মানবতার কতটা অভাব রয়েছে।
মাইনুরজ্জামান সেন্টুর মৃত্যুর খবর আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানবতা এবং সহানুভূতির প্রয়োজন কতটা জরুরি। আমরা যেন তার এই কষ্টময় জীবন ও মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা ভুলে না যাই এবং আমাদের সমাজের অসহায় মানুষদের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেই। মাইনুরজ্জামান সেন্টুর এই করুণ মৃত্যু আমাদের সকলের জন্য একটি জাগরণ হওয়া উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।