জুমবাংলা ডেস্ক: প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতে পালিয়ে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়েছিল। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের অধীনে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে তাকে হাজির করে আরও ১৪ দিনের রিমান্ড চায় ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সিবিআই স্পেশাল কোর্টের বিচারক মাসুক হোসেইন খান ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ সময় সাংবাদিকরা মামলার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে পি কে হালদার বলেন, ‘আমি এখনই কিছু বলছি না। তিন-চার দিন পর যা বলার বলব।’
আপনাকে কি ফাঁসানো হয়েছে? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মহামান্য আদালত কী রায় দেন দেখি। তারপর যা বলার বলবো।’
আদালতের সরকারি আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন। সরকারি পক্ষের আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, ১৪ দিনের বদলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যদিকে আসামি পক্ষের দাবি- চার দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদের তিনটি বিষয়ে অনুমতি চেয়েছে ইডি। সেগুলো হলো- চার্জশিট ছাড়া হেফাজতে রেখে দেওয়ার অনুমতি, দেশ ও দেশের বাইরে তদন্তের স্বার্থে যেখানে খুশি অভিযুক্তদের নিয়ে যাওয়ার অনুমতি এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি।
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারকে শনিবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এদিন আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশি। তারা হলেন- প্রীতিশ কুমার হালদার ও তার স্ত্রী (নাম জানা যায়নি), উত্তম মিত্র ও স্বপন মিত্র। এছাড়াও প্রণব হালদার নামে এক ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে ইডি। পরবর্তীতে সঞ্জীব হালদার নামে একজনকে আটক করার কথা জানায় ইডি। তিনি পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধার জামাই।
বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় ইডি। ইডি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আধার কার্ডের মতো বিভিন্ন সরকারি পরিচয়পত্রও সংগ্রহ করেছেন পি কে হালদার। জালিয়াতির মাধ্যমে এসব পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে শিবশঙ্কর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছিলেন।
এর আগে গত শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের অন্তত নয়টি স্থানে একযোগে অভিযান চালায় ইডি। এতে কয়েকটি অভিজাত বাড়িসহ পি কের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। বাড়িগুলো থেকে জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি জব্দ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদারের ২০ থেকে ২২টি বাড়ি আছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেপ্তার করতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।
সূত্র: সমকাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।