পাবনার বেড়া উপজেলায় একটি মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের পর একজনের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। শনিবার (২৬শে জুলাই) একজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন।
রবিবার (২৭শে জুলাই) সকালে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই জরুরি অবস্থা জারির কথা জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারামারি, অগ্নিসংযোগ, এবং দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনা ঘটেছে। বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মাধ্যমে পুনরায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ পাওয়ায় ২৭ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ২৮ জুলাই সকাল ১০টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এই আদেশ অনুযায়ী, ওই এলাকায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা বহন, মাইকিং, পাঁচ বা তার বেশি মানুষের সমাবেশ, মিছিল ও চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিরোধের সূত্রপাত কয়েক বছর আগে। পুরোনো মসজিদে মিলাদ মাহফিলে কিয়াম পড়া নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। সে সময় মসজিদের তৎকালীন কোষাধ্যক্ষ মতিনসহ একটি পক্ষ কিয়াম পড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে গ্রামে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণ করে।
সম্প্রতি সেই নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে পুরোনো বিরোধ আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। একই গ্রামে দুটি মসজিদ নির্মাণের বিরোধিতা করে অন্য একটি পক্ষ। এই বিরোধের জের ধরে শুক্রবার (২৫শে জুলাই) সকালে নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণের কাজ শুরু হলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ হাঁসুয়া, ট্যাঁটা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে শনিবার। সংঘর্ষে আহত হাদিস নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। বিক্ষুব্ধরা প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। বর্তমানে ওই এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হলেও স্থানীয়দের মধ্যে চাপা আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আবার সংঘর্ষের আশঙ্কায় প্রশাসন এই কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।