জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘ দুই যুগ পর অবশেষে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল চট্টগ্রামের আনোয়ারা-চন্দনাইশ সংযোগ সড়কের ‘বরকল সেতু’। দুই উপজেলার মধ্যবর্তী সংযোগ স্থাপনকারী চানখালী খালের ওপর ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের ফলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলায়। পাশাপাশি এ সেতুর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারবে চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া উপজেলাসহ পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম।
এতে কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজতর হবে বলে মনে করছেন সেতুসংশ্লিষ্টরা। ফলে পাল্টে যাবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আর্থসামাজিক অবস্থা। টানেল-সংযুক্ত নবনির্মিত ছয় লেন সড়ক এসে শেষ হয়েছে কালাবিবির দিঘির মোড়ে। এরপর সংযুক্ত হয়েছে দক্ষিণে বাঁশখালী সড়কের পূর্বদিকে আনোয়ারা বরকল সড়ক, যা মূলত ছয় লেন সড়কের মূল ভূমিকা রাখবে এ বরকল সেতু। টানেল আর সংযুক্ত ছয় লেনের কাজের সঙ্গে বরকল সেতু নির্মাণ হওয়ায় টানেল সংযোগে নতুন সম্ভাবনা হবে আশা প্রকাশ করেছে সচেতন মহল।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। সেতুর দুই পাশে ৫০০ মিটার সংযোগ সড়কের কাজও শেষ হয়েছে। শুধু কার্পের্টিং ও রঙের কাজ বাকি। ভাঙনরোধে সেতুর দুই পাশে বসানো হয়েছে সিসি ব্লক। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে জানান প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৯৯৪ সালে এক কোটি টাকা ব্যয়ে বেইলি সেতু নির্মাণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। কিন্তু দীর্ঘ দ্ইু যুগের বেশি সময় পার হলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নির্মিত হয়নি পূর্ণাঙ্গ সেতু।
সেই থেকে স্থানীয়রা ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুটির স্থলে স্থায়ীভাবে সেতু নির্মাণের দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পরে ২০১৫ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চানখালী খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুটি পরিদর্শন করে দ্রুত একটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশের আলোকেই বরকল সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে এরই মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। ২৮ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক পিসি গার্ডারবিশিষ্ট সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১৮ মিটার আর প্রস্থ ১০ দশমিক ২৫ মিটার। সেতুটি নির্মাণে খালের দুই পাড়ে দুটি অ্যাবার্টমেন্ট, খালের মাঝখানে দুটি পিলার, তিনটি স্প্যান এবং প্রতিটি স্প্যানের পাঁচটি গার্ডার রয়েছে। এ মাসের শেষে বা আগস্টের মধ্যে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দোহাজারি সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া বলেন, সেতুর কাজ প্রায় শেষ। সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজও শেষ হয়েছে। শুধু ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি রয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। সেতুমন্ত্রী যখন নির্দেশ দেবেন তখন সেতুটি উদ্বোধন করা হবে। এটি উদ্বোধন হলে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।