পদ্মা সেতু চালু হলে বেশি লাভবান হবে ঝিনাইদহের কৃষক

পদ্মা সেতু

জুমবাংলা ডেস্ক : স্বপ্নের পদ্মা সেতু রূপ নিয়েছে বাস্তবে। আগামী ২৫ জুন উন্মুক্ত হবে দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত এ সেতু। এতে কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণে সুবিধা হবে। তাই আশায় বুক বেঁধেছেন ঝিনাইদহের কৃষকরা। তাদের আশা, সেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় সবজি, ফুল, পেঁয়াজসহ কৃষিপণ্যর ভালো দাম পাওয়া যাবে। পাশাপাশি লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরাও।

পদ্মা সেতু

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, পদ্মা সেতু চালু হলে জেলার ৬টি উপজেলার প্রায় ৫ লাখ কৃষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাভবান হবেন। কৃষকরা জানান, এ সময়ে প্রচুর পেঁয়াজ, মসুরি, শর্ষে, ধনিয়াসহ বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য উৎপাদিত হয়।

কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তা ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পারে না। যার সুযোগ নেয় মধ্যস্বত্বভোগীরা। বিশেষ করে পচনশীল পণ্য কম দামে ছেড়ে দিতে হয়। পদ্মা সেতু হয়ে গেলে খুব কম সময়েই পণ্য বাজারজাত করা যাবে। এতে সরাসরি লাভবান হবেন তারা।

শহরের পবহাটি কলারহাটে কলা বিক্রি করতে আসা শৈলকুপা উপজেলার ভাটই গ্রামের কলা চাষি আল আমিন মিয়া বলেন, ‘আমি প্রতিবছর ৪ বিঘা জমিতে কলার আবাদ করি। কলা হাটে এনেও বিক্রি করি। আবার ব্যাপারিরাও জমিতে যেয়ে কিনে আনে। জমি থেকে কিনতে গেলে দাম কম পাই। হাটে এসে বিক্রি করলে তুলনামূলকভাবে দাম বেশি পাই। তবে পদ্মাসেতু চালু হলে আমরা কলার আরও দাম পাব বলে আশা করছি। কারণ পরিবহন ব্যবস্থা ভালো হলে আমরা নিজেরাই যেয়ে বিক্রি করতে পারবো।’

স্থানীয় সংবাদকর্মী এম সেলিম বলেন, ‘এই হাটসহ আশপাশের যে হাটগুলো আছে সেখানে কলা নিয়ে আসেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভ করে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করে। সেই কলা আড়তদার বা ঢাকার ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আরও বেশি দামে বিক্রি করে। সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে একজন কলা চাষি যে দাম পাচ্ছে তার থেকে দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেশি দামে কিনছেন ভোক্তারা। পদ্মা সেতু চালু হলে কৃষক সরাসরি ভোক্তার কাছে কলাসহ যে কোনো পণ্য বিক্রি করতে পারবেন বা মধ্যবর্তী দালালের সংখ্যা কমে আসবে, এখন যেখানে তিন-চার হাত ঘুরে পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছায়, সেটা হয়তো এক বা দুই হাত ঘুরেই ভোক্তার কাছে পৌঁছাবে। এতে একদিকে কৃষকরা যেমন তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বেশি পাবেন, অন্যদিকে ভোক্তারাও কম দামে পণ্য কিনতে পারবেন।’

কলার পাশাপাশি সবজি উৎপাদনে এই জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বেঁধেছেন। জেলার বিভিন্ন হাট থেকে সবজি পাঠানো হয় রাজধানীতে। কিন্তু বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের বিলম্বের কারণে অনেক সময় দেরিতে আড়তে পৌঁছায়। এতে লোকসানের সম্মুখীন হন ব্যবসায়ীরা।

শৈলকুপার চড়িয়ারবিল বাজারের সবজি ব্যবসায়ী কুদ্দস হোসেন বলেন, ‘আমরা এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনে ঢাকা পাঠাই। অনেক সময় ঘাটে জ্যাম থাকে, ট্রাক ঢাকায় পৌঁছাতে দেরি হয়। দেরি হলে আর ভালো দাম পাওয়া যায় না। সেতু চালু হলে রাত ১২টার মধ্যে আমাদের পণ্য ঢাকা চলে যাবে। দাম ভালো পেলে আমরাও লাভবান হব। কৃষক ভাইয়েরাও দুটো টাকা বেশি পাবে।’

পিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শাকিরার প্রথম পোস্ট ভাইরাল

এ ব্যাপারে জেলা মার্কেটিং অফিসার গোলাম মারুফ খান বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের এলাকার কৃষক ভাইদের ভাগ্য উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এলাকার কৃষক ঢাকা বা দেশের অন্য স্থানে সবজি বিক্রি করতে যেতে পারেন না। এখন কিন্তু সেতু চালু হলে কয়েকজন কৃষক ইচ্ছা করলে সহজেই সবজি ঢাকায় পাঠাতে পারবে। আর সেখানে তাদের সবজি বিক্রির জন্য আমরা সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করব।