জুমবাংলা ডেস্ক: পদ্মা নদীর বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য এর ওপর সেতু নির্মাণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ছিল। এ ক্ষেত্রে স্রোত যেমন, তেমনি গভীরতাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। পদ্মার থই পাওয়া তো খুবই কঠিন। পদ্মার গভীরতা কত আসলে? এর উত্তর একবাক্যে দেওয়া কঠিন। যেকোনো নদীরই একেক অংশের গভীরতা একেক রকম। যেখানে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে, সেখানে এর গভীরতা প্রায় ৪০ মিটার বা ১৩১ ফুট। সাধারণ কোনো ভবনের প্রতিটি তলার উচ্চতা ১০ ফুট করে ধরলে এই গভীরতা ১৩ তলা ভবনের উচ্চতার সমান।
তাহলে ১৩ তলা উচ্চতার সমান দৈর্ঘ্যের কলাম দিলেই তো হয়। হয় না, কারণ এই দৈর্ঘ্য দিয়ে তো কলাম বা পিলারগুলো কেবল নদীর তলদেশ ছুঁতে পারবে। তলদেশে পিলারগুলো গাঁথতে না পারলেও স্রোতেই ভেসে যাবে সেতুটি। এখানে হলো আরেক চ্যালেঞ্জ। পদ্মার তলদেশ বেলে ও পলিমাটি দিয়ে গঠিত। পদ্মা কেন, দেশের সমভূমির কোনো নদীরই তলদেশে পাথর নেই। ফলে পিলার গাঁথার মতো শক্ত ভিত পেতে তলদেশ ফুঁড়ে বেশ অনেকটা যেতে হয়। পদ্মার ক্ষেত্রেও নিয়ম একই।
পিলার কতটুকু গাঁথতে হবে, তা হিসাব করা হয় সংশ্লিষ্ট নদীর তলদেশের মাটি সরে যাওয়ার সর্বোচ্চ প্রবণতাকে মাথায় রেখে। অর্থাৎ কোনো নদীর যে অংশ সেতু তৈরি হচ্ছে, সেখানকার তলদেশের মাটি যদি সর্বোচ্চ ১০ ফুট সরে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তবে পিলার ১০ ফুটের বেশি গভীরে গাঁথতে হবে। এটাই সাধারণ নিয়ম। পদ্মায় এই মাটি সরে যাওয়া বা স্কাওয়ারের সর্বোচ্চ রেকর্ড হলো ৬১ মিটার বা প্রায় ২১০ ফুট। অর্থাৎ নিরাপদ ভিত পেতেই ২১ তলা ভবনের উচ্চতার সমান দৈর্ঘ্যের পিলার গাঁথতে হবে সেখানে।
এটুকুতেই তো পিলারের দৈর্ঘ্য হয়ে গেল (১৩+২১) ৩৪ তলা ভবনের উচ্চতার সমান। কিন্তু নিরাপদ ভিত পর্যন্ত শুধু পৌঁছালেই তো হবে না। আবার এত দিন স্কাওয়ারের রেকর্ড ৬১ মিটার ছিল বলে আজীবন তাই থাকবে, তাও তো নিশ্চিত বলা যায় না। পদ্মা নতুন রেকর্ড করতেই পারে এবং তা সেতুর স্থানটিতেই হতে পারে। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আরও অনেকটা গভীরেই গাঁথতে হবে পিলারগুলো। কারণ, বছর বছর তো আর পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ করা যাবে না। তাই গড়ে ১২০ মিটারের পাইল দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চটি ১৫০ দশমিক ১২ মিটার বা ৪৯২ দশমিক ৫ ফুট। অর্থাৎ, সেতুটি নির্মাণের জন্য এমনকি প্রায় ৫০ তলা ভবনের উচ্চতার সমান দৈর্ঘ্যের পিলার স্থাপন করতে হয়েছে!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।