পদ্মায় বেপরোয়া আওয়ামী লীগের জেলে সিন্ডিকেট

Ilish Fish

জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর বেশির ভাগ এলাকায় ক্ষমতার হাতবদল ঘটেছে। তবে পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া অংশে দলটির নেতাদের জেলে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়। নিষেধাজ্ঞার সময়ও ভয়ে নদীতে অভিযানে যেতে পারে না পুলিশ। যেসব পুলিশ সদস্য সাহস দেখান, তাদের চড়া মূল্য দিতে হয়।

Ilish Fish

গত ২৮ অক্টোবর এমনই অভিযানে গেলে মেরে জেলেরা পানিতে ফেলে দেয় কুমারখালী থানার এএসআই মুকুল হোসেন ও সদরুল হাসানকে। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জেলেদের হামলায় আহত হন এসআই নজরুল ইসলাম, কয়া ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সানোয়ার হোসেন ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটন।

আজ রোববার পদ্মায় ইলিশ ধরার ওপর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। স্থানীয়রা জানান, ১৩ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞা ছিল শুধুই কাগজ-কলমে। নদীর কুমারখালী অংশে দিনরাত চলেছে মা ইলিশ নিধন। কয়েকশ জেলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। এসব জেলে সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা। তারা নৌকাপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার করে চাঁদা নেন।

সম্প্রতি শিলাইদহ ও কয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পদ্মায় বালু উত্তোলন, মাছ ধরা ও জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ে সক্রিয় আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ। একপক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার, কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল খালেক, তার দুই ছেলে– রিপন ও শিপন, কয়া ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সানোয়ার হোসেন ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আনোয়ার হোসেন টিটন। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর স্বপন ও তুষার গা-ঢাকা দিলেও, বাকিরা নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন। অন্যপক্ষ সক্রিয় ইয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে।

ইয়ারুল গ্রুপের জেলে নুর ইসলামের স্ত্রী পূর্ণিমা খাতুন বলেন, নদীতে নামলেই আওয়ামী লীগ নেতা খালেক, স্বপন, ছলিম ও টিটন মেম্বারের লোকজন চড়াও হয়। চাঁদা না দিলে নৌকা ডুবিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানান, ২৮ অক্টোবর পদ্মায় পুলিশের ওপর হামলা হয় আব্দুল খালেক ও তার দুই ছেলের নেতৃত্বে। তারা জেলেদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন চাঁদাবাজি করছেন। তবে আব্দুল খালেকের ছেলে রিপন জানান, তারা নন, নদীর সব অপকর্মে ইয়ারুল জড়িত।

কয়া ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন ছলিম বলেন, ইয়ারুল জেলেদের কাছ থেকে প্রতিরাতে নৌকাপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইয়ারুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন ও তুষারের নেতৃত্বে পদ্মায় জেলেদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। মাছ, জাল ও নৌকা কেড়ে নেয়। নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়।’

প্রেমিক শাহীনকে বিয়ের দাবিতে দুই তরুণীর অনশন

উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘পদ্মায় ব্যাপক সিন্ডিকেট রয়েছে। অভিযানে যাওয়ার আগেই জেলেরা খবর পেয়ে যান। সিন্ডিকেটের কাছে সবাই অসহায়।’

সূত্র : সমকাল