আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাই। বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব উপায়ে সহযোগিতা করবে পাকিস্তান।’
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈশ্বিক নানা বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ নিয়েও কথা বলেন ইশহাক দার।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক নতুন গতি পেয়েছে।
১৯৭১ সালের পর প্রথমবার সরাসরি সমুদ্র যোগাযোগ চালু হয়েছে। একইসঙ্গে পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের কার্গো পরিদর্শন সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেয়া হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। ১৯৭১ সালের পর এটিই প্রথম কোনো পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজের বাংলাদেশে নোঙর করার ঘটনা।
উভয় দেশের মধ্যে এই সরাসরি সমুদ্র সংযোগকে ঐতিহাসিক বলেও আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় সমুদ্রপথে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে সরাসরি এই সংযোগে ভারতের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা নিয়ে প্রশ্নও আছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে বলে জানিয়েছেন করাচিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার এস এম মাহবুবুল আলম। এই উদ্যোগ দুই দেশ এবং তাদের ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের মধ্যকার সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বহু বছর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্য হতো না। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হলেও পাকিস্তান থেকে সাধারণত সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রামে আসতো না। সেদেশের পণ্যবাহী জাহাজ প্রথমে শ্রীলঙ্কায় কন্টেইনার খালাস করতো। এরপর জাহাজ বদল করে সেসব কন্টেইনার বাংলাদেশে আসতো।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে দুই দেশের মাঝে শীতল সম্পর্ক ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত হতে থাকে। তখন নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অধিকাংশ পণ্য ‘লাল তালিকাযুক্ত’ করে এনবিআর।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের অনুরোধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর লাল তালিকা থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটির সব ধরনের পণ্য। তবে শুধু এক্ষেত্রে নয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়নে আরো অনেক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে অধ্যাপক ইউনুস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে বৈঠকের ঘোষণায়ও উল্লেখ করা হয় যে—দুই দেশই বিভিন্ন স্তরে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করেছে। আর এসবের মাঝে নতুন করে এই জাহাজ ভেড়ানোর খবর দুই দেশের সম্পর্কের উষ্ণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্র: মিনিট মিরর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।