লাইফস্টাইল ডেস্ক: মানুষ সরিসৃপ জাতীয় প্রাণীদের মধ্যে সাপ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। বিষাক্ত এবং অবিষাক্ত প্রকৃতির সাপগুলোর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে যে কোন জীবের প্রজাতির সংখ্যার কোন নির্দিষ্টতা নেই। নিত্যনতুন বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর দেখা মিলছে। এমন অনেক প্রজাতির প্রাণী আছে যা পূর্ব থেকেই আছে কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত খুঁজে পায় নি।
জীব বৈচিত্র্যের কারনে প্রাণীর সংখ্যার কোন বাড়তেই থাকে। প্রাণীর সংখ্যা কমতে থাকলেও খুব বেশি দ্রুতগতিতে কমে না। সমুদ্রের তলদেশে এমন জায়াগাও আছে যেখানে সূর্যের আলো পৌছে না, ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে থাকে। পানির নিচে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ বের করতে গেলে কমন প্রজাতির সাপ সবার মনে আসবে। এই প্রজাতির নাম আমি আপনি সবাই জানি এবং এর উপর ইংলিশ মুভি ও তৈরি হয়েছে।
আমেরিকার ব্রাজোস নদী এবং এর আশেপাশে অঞ্চলগুলোতে অন্য যে কোন প্রাণীর জন্য অপরিচিত বিশেষ করে সরিসৃপ জাতীয় প্রাণীদের জন্য। তবে সরিসৃপ জাতীয় প্রাণীদের জন্য এই নদী আদর্শ জায়গা। ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির সাপদের জন্য ঐ স্থানের জলবায়ু অনেক উপযুক্ত প্রকৃতির। বিশেষ করে র্যাটেল স্নেক, বিষাক্ত সাপ, অবিষাক্ত সাপ, কটনমাউথ সাপ, ডায়মন্ড ব্যাক সাপ। অবিষাক্ত সাপদের মধ্যে র্যাট স্নেক, মাড সাপ, ওয়াটার স্নেক (water snake). নাম দেখেই বুঝা যায় Water snake পানিতে থাকে এবং এদের সম্পূর্ন বডিই পানির নিচে থাকে। টেক্সাসের ব্রাজোস নদীতে যে সাপগুলো দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো বেশীভাগ অবিষাক্ত প্রকৃতির এবং ছোট আকারের। তবে এই জায়গায় বেশীভাগ সাপ একই প্রজাতির হয়ে থাকে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এরা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। কিন্তু কিভাবে এরা এত বড় হতে পারে।
কেন এর নাম ব্রাজোস হলঃ
ব্রাজোস নদীর নাম স্প্যানিস শব্দ থেকে এসেছে। ইংরেজিতে এর অর্থ হল The Arms of God. যাকে বাংলায় বলা হয় সৃষ্টিকর্তার হাত। কিন্তু এসব নাম পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা এবং বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে দেওয়া হয়েছিল। নাম দেওয়ার পিছনে যৌক্তিক কোন কারন নেই। এই নদীকে যুক্তরাষ্ট্রের সাপের খনিও বলা চলে। কারন এখানে সাপের সংখ্যা এত বেশি যা আপনার আমার ধারনার বাহিরে। একই সাথে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ এর দেখাও এখানেও মিলেছে।
উৎপত্তিস্থলঃ
টেক্সসের ব্রাজোস নদী লোকালি রিও ডি ব্রাজোস নামেও পরিচিত। কিন্তু এই নদী টেক্সাসের উত্তর দিক থেকে প্রবেশ করলেও এর উৎপত্তি হয়েছে মেক্সিকোর গালফ উপসাগরে। এর আয়তন ৪৫০০০ বর্গ মাইল এবং এরা পৃথিবীর ১১ তম দীর্ঘ বৃহত্তম নদী। আমেরিকার বৃহত্তম নদীদের মধ্যে এটি সবার শীর্ষে অবস্থান করে। এত বিশাল আকৃতির প্রশস্ত নদী হওয়ার কারনে পূর্ব টেক্সাসের এবং পশ্চিম টেক্সাসের মধ্যে বর্ডার রূপে কাজ করে।
এই নদীর Water Snake গুলো কিভাবে চিনবেনঃ
এসব সাপেরা অনেক ছোট প্রকৃতির এরা বাদামি এবং ধূসর প্রকৃতির হয়। কিছু কিছু সাপ সবুজ রঙেরও হয়ে থাকে। ব্রাজোস নদীতে সাপগুলো স্কিনের উপর কালো কালো ছোপ যুক্ত বড় বড় ব্লক থাকে হালকা করে। এদের মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত দেখতে দাবার বোর্ডের মত দেখায়। কিন্তু এই নদী ছোট সাপই বিপুল পরিমানে দেখতে পাওয়া যায়। যেহেতু এখানে প্রচুর পরিমানে সাপ দেখা মিলে তেমনি পেটের দিকে গোলাপি এবং কমলা রঙের হয় এবং একই সাথে ঘাড়ের দিক হালকা হলুদ রঙের হয়।
চলাচলের স্থানঃ
এদের মাঝ নদীতে কিংবা খরস্রোত জায়াগায় দেখতে পাওয়া যায় না। বরং পাথুরে রাস্তায় পানি যেমন ধীরে চলাচল করে সেসব জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপঃ
এই নদীর উৎপত্তির পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনেক সাপের আবাসস্থল। এই নদী ছোট সাপদের আতুড় ঘর। তবে কিছু কিছু সাপ ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এই বড় হওয়ার কারনে এখানে কিছু প্রজাতির সাপদের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক বড় আকারের সাপ পাওয়া গিয়েছে। যা পানির নিচে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ হিসেবে এখানে দেখা মিলেছে। ছোট আকারের সাপগুলো ১৬-৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই দৈর্ঘ্য মাথা থেকে শুরু করে লেজ পর্যন্ত মাপার পর পাওয়া যায়। এখানে সর্বোচ্চ ৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা সাপের দেখা মিলেছে।
ব্রাজোস নদীর সাপের খাদ্যঃ
এরা মাংশাসী প্রাণী এবং দিনের বেলায় শিকার ধরে থাকে। এই নদীর সাপের সেসব প্রাণীদের টার্গেট করে থাকে যারা দিনের বেলায় একাই চলতে পছন্দ করে। স্যালমাণ্ডার, ব্যাঙ এবং অন্যান্য উভচর প্রাণীদের মধ্যে যারা ঐ নদীতে এবং নদীর আশেপাশে দেখতে পাওয়া যায় সেগুলোকে খাবার খেয়ে থাকে। তবে এরা ক্রে ফিশ এবং আরও অন্যান্য ছোট মাছ খেতে পছন্দ করে। ইঁদুর, পোকা-মাকড় এবং সদ্য জন্মানো সরিসৃপ জাতীয় প্রাণীদের স্থান এদের খাদ্য তালিকার শীর্ষে অবস্থান করে।
পরিশেষে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা গেল।এছাড়াও অ্যানাকোন্ডা সাপ নিয়েও আমাদের অনেক ধারনা আছে। তারপরও এনাকোন্ডা সাপ নিয়ে নতুন কিছু জানার থাকলে আগামিতে এটা নিয়ে আর্টিকেল লেখা হবে। ততক্ষন পর্যন্ত ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন। লেখাটি ভাল লাগলে শেয়ার আপনার টাইমলাইনে শেয়ার করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।