স্পোর্টস ডেস্ক : সামনে এশিয়া কাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপের মত বড় দুইটা আসর। বাকি দেশগুলো যেখানে ব্যস্ত শক্তিশালী দল গঠন করতে, সেখানে বাংলাদেশের মাথাব্যাথা দুই আসরে নিজেদের অধিনায়ক বাছাই নিয়ে। কারণ বৃহস্পতিবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের বাসায় বৈঠকের পর ওয়ানডে নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। এমনকি চোটের কারণে এশিয়া কাপও খেলতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন তামিম।
মেরুদণ্ডের হাড়ের ডিস্কে ক্ষত, যা কিনা একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে, সেটা পাত্তা দেওয়া হয়নি! তামিমের রিপোর্ট দেখে হতবাক তো বটেই, মেজাজও গরম হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। বিষয়টি নিয়ে যে অবহেলা হয়েছে তা বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে অকপটে স্বীকার করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, কেন অবহেলা হয়েছে সেটাও তদন্ত করে বের করার প্রত্যয় শোনা গেল তার কণ্ঠে। কিন্তু এই অবহেলায় যে তামিমের এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেল, বিশ্বকাপও শঙ্কায় পড়ে গেল; ছেড়ে দিতে হলো ওয়ানডে নেতৃত্ব, সেটার কী হবে! বিশ্বকাপের জন্য কতদিন ধরে দল গোছাচ্ছিলেন তিনি। অথচ এখন তিনিই কিনা অনিশ্চিত! এই আফসোস ভোলা কি এত সহজ!
চোটের কারণে তামিমের খেলা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়াতেই দল ও দেশের কথা ভেবে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তামিম। তার নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়াকে বিসিবির জন্য ‘ধাক্কা’ হিসেবে উল্লেখ করে নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমরা সবাইকে বলেছিলাম, বিশ্বকাপ পর্যন্ত তামিমই অধিনায়ক। কিন্তু চোটের কারণে নেতৃত্ব ছেড়ে দিচ্ছে সে।’
বিসিবি বস আরও জানিয়েছেন, তামিমের চোট নিয়ে বলতে গেলে প্রায় অন্ধকারেই ছিলেন তিনি। কিন্তু তার পাশে বসা তামিম বুঝতে পারছেন না, কেন চোট নিয়ে নাজমুল হাসানকে অন্ধকারে রাখা হলো। বিষয়টি অবাক হওয়ার মতো এ জন্য, বিসিবির মেডিকেল টিম নিয়মিতভাবেই তামিমের চোট নিয়ে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও টিম ম্যানেজমেন্টকে অবহিত করে আসছে। তাহলে কেন নাজমুল হাসান বিষয়টি জানলেন না? সবচেয়ে বড় বিষয় মেডিকেল টিম চোট খুঁজে পাওয়ার পরও কেন চিকিৎসা হলো না?
এসব বিষয়ে সাধারণত বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগ নাজমুল হাসানকে অবহিত করে থাকে। কিন্তু তামিম নিজে তার রিপোর্ট পাঠানোর পরই বিসিবি বস তারকা এ ওপেনারের চোটের গভীরতা বুঝতে পারলেন। ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস যে তাঁকে ক্রিকেটারদের সব খবরাখবর দেন, সেটা বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেনও পাপন। এ জন্য খালেদ মাহমুদ সুজন টিম ডিরেক্টরের পদ ছাড়ায়ও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে নাজমুল হাসান বলেন, ‘তামিম কিন্তু ঢাকায় এমআরআই বা স্ক্যান যা যা করার করেছে। ভারতে, ব্যাংককে, লন্ডনে করেছে। এবার প্রথম দুবাই থেকে রিপোর্ট পাঠায়, সেখানে প্রথম দেখি সমস্যা আছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটা দেখার পরই আমি তামিমকে বলি, দেবাশীষকে (বিসিবির প্রধান চিকিৎসক) সঙ্গে নিয়ে আমাকে ফোন করো। কেন আমাকে এই চোটের কথা এতদিন জানানো হলো না!’ তখন তামিম বলেন, ‘আমার চোট কিন্তু ২০২২ সালের নভেম্বর থেকেই ছিল। আগে রিপোর্ট পাঠাইনি। এবার রিপোর্ট পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে বলেছেন, কেন তাকে আগে জানানো হয়নি। জানাতে বলেছেন। এটা আসলে কারও সঙ্গে হওয়া উচিত নয়।’
এই অবহেলা দেখে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘রিপোর্ট দেখার পর আমার তো মেজাজই গরম হয়ে গেল। এটা যাতে ভবিষ্যতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে। নিশ্চয়ই কোনো না কোনোভাবে অবহেলা করা হয়েছে। তাই বিশ্বকাপের আগে এই অবস্থায় পড়তে হয়েছে। এটা অবশ্যই দুঃখজনক।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।