জুমবাংলা ডেস্ক : এক বছর আগে কুমিল্লা জেলার চৌদগ্রামের হাজীরপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ১৩ বছরের হিমু আক্তার। হারিয়ে যাওয়ার পর থেকেই সন্তানের খোঁজ করেছেন মা-বাবা।
দীর্ঘদিন ধরে খোঁজ না পাওয়ায় সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে ফেসবুকের কল্যাণে এক বছর পর মা-বাবা ফিরে ফেলেন তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে।
হিমুর বাবা মো. হানিফ মিয়া চৌদগ্রামের হাজীরপাড়া এলাকার একজন অটোরিকশা চালক ও মা সুফিয়া বেগম গৃহিনী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর রাতে পতেঙ্গা থানার ফুলছড়ি পাড়া থেকে হিমু আক্তারকে (১৩) উদ্ধার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। তখন পুলিশ হিমুর আত্মীয়-স্বজনের কোনও খোঁজে পায়নি। পরেরদিন তার নিরাপত্তার জন্য হাটহাজারীর ফরহাদাবাদ এলাকার মহিলা ও শিশু-কিশোরী আবাসন কেন্দ্রে রাখার জন্য পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবি রানী বড়ুয়া আদালতে আবেদন করেন। আদালতের আদেশে তাকে ফরহাদাবাদ এলাকার ওই আবাসন কেন্দ্রের হেফাজতে রাখা হয়। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর হিমুর বাবা হানিফ মিয়া চৌদ্দগ্রাম থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। কিন্তু মেয়ের কোনও খোঁজ পাননি।
পরে ফেসবুক লাইভের একটি ভিডিও দেখে মেয়ের সন্ধান পান তিনি। এরপর এ বছরের ১১ জানুয়ারি হিমুকে ফিরে পেতে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালতে একটি আবেদন করেন। আদালত ঐদিন হিমুর উপস্থিতে রোববার (১৫ জানুয়ারি) শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। শুনানি শেষে প্রমাণিত হওয়ায় মেয়েকে বাবা হানিফ মিয়ার জিম্মায় দেন আদালত।
হিমুর বাবা হানিফ মিয়া বলেন, আমার ভাতিজি জামাই ওমান থাকেন, সেখানে ফেসবুকের একটি লাইভ ভিডিওতে হিমুকে দেখতে পায়। পরে সেখান থেকে হিমুর ছবি আমাদের কাছে পাঠায়। সেই ছবি নিয়ে আমরা কুমিল্লা থেকে হাটহাজারী থানার ফরহাদাবাদ এলাকার মহিলা ও শিশু-কিশোরী নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে যায়। সেখানে মেয়ের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আদালত থেকে আদেশ আনতে বলেছিলেন সেখানকার কর্মকর্তারা। আজকে আদালতে আমার মেয়েকে আমার কাছে দিয়ে দিলেন। বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর বহুদিন খোঁজ করেছিলাম। একপর্যায়ে হিমুর মানসিক সমস্যা থাকায় আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।
হিমু আক্তারের পক্ষের আইনজীবী কৃষ্ণ প্রসাদ শর্মা জনি বলেন, প্রায় এক বছরের অধিক সময় হিমু আক্তার নিখোঁজ ছিলেন। হিমুর অবস্থান সম্পর্কে বাবা হানিফ মিয়া জানার পর গত ১১ জানুয়ারি আদালতের কাছে মেয়ের জিম্মা চেয়ে আবেদন করেন। রোববার শুনানি শেষে হিমুকে তার বাবার জিম্মায় দেন আদালত।
চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দীন বলেন, হারিয়ে যাওয়া হিমুকে ফিরে পেতে তার বাবা মো. হানিফ মিয়া আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন। আদালত হিমুকে মো. হানিফ মিয়া সম্পর্কে নানা ধরনের প্রশ্ন করেন। আদালতে হানিফ মিয়া বাবা হিসেবে প্রমাণিত হওযায় তাঁর জিম্মায় হিমুকে দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।