জুমবাংলা ডেস্ক : সংসারের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার কারণে সম্পন্ন করতে পারেননি পড়াশুনা। এরপর রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। নির্বাচিত হন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। ইউপি সদস্যের যোগ্যতার ক্ষেত্রে সরকার নতুন নিয়ম করায় প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আবার শুরু করেন পড়াশুনা।
ইচ্ছার জোর ও পড়াশুনার প্রতি আগ্রহের কারণে এবার এসএসসি পাশ করতে সক্ষম হয়েছেন গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাফেজ মো. শামীম মৃধা। শুক্রবার (২৮ জুলাই) প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, ৩৪ বছর বয়সী শামীম জিপিএ ৪.৪৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাফেজ মো. শামীম মৃধার এমন সাফল্যে মিষ্টি ও ফুল নিয়ে বাড়িতে হাজির হন ভোটার ও সমর্থকেরা। মো. শামীম মাওনা গ্রামের আবুল হাসেম মৃধার ছেলে। তিনি মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। পুবাইল টেকনিক্যাল কলেজ থেকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন শামীম।
ইউপি সদস্য শামীম মৃধা বলেন, ‘আমি যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি, তখন আমাকে কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে আমি হাফেজি পড়া সম্পন্ন করি। এরপর সাধারণ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ২০০০ সালের দিকে পুনরায় অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হলেও বাবার মৃত্যুর পর সাংসারিক দায়িত্ব গ্রহণ ও ছোট ভাইদের দায়িত্ব ঘাড়ে নেওয়ায় খুব একটা এগিয়ে যাওয়া হয়নি। এ অবস্থার মধ্যেই গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য (মেম্বার) পদে আমি প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করি। এলাকার ভোটারেরা আমাকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন।’
হাফেজ মো. শামীম মৃধা বলেন, ‘গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে প্রচার হয়, নির্বাচনে অংশ নিতে একজন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে নূন্যতম এসএসসি পাস করতে হবে। তাই আমি ভর্তি হই। আল্লাহ্ আমার মনের আশা পূরণ করেছেন। আমি এতে বেশ উৎফুল্ল। কলেজে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার ইচ্ছা আছে আমার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম খোকন বলেন, ‘ইউপি সদস্য শামীম খুবই দায়িত্বশীল। মানুষকে সেবা করার মানসিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। এ বয়সে তার উচ্চশিক্ষা গ্রহণ অন্যান্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। শিক্ষার যে কোনো বয়স নাই, শামীম মৃধাই তার দৃষ্টান্ত।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।