সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে এবং নার্সের অবহেলার কারণে ইতি বেগম নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৩টায় মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডে (মহিলা) এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত নার্স রিপা আক্তার পলাতক রয়েছেন।
নিহত ইতি বেগম সাটুরিয়া উপজেলার পশ্চিম কুষ্টিয়া এলাকার সোহেল হোসেনের স্ত্রী।
জানা যায়, ঠান্ডা জ্বর ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ইতি বেগম। জরুরী বিভাগের ডিউটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রাতেই তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু বিপত্তি ঘটে ১৭ জুলাই রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ার পরে। একাধিকবার নার্সকে ডেকে চিকিৎসা সেবা নিতে ব্যাহত হয়। এরপর ডাক্তার আসে বিকেল ৩ টায় এবং ইসিজি টেষ্ট করার পরেই রোগী মৃত্যুবরণ করেন।
ইতি বেগমের ভাই আরিফ হোসেন বলেন, “আমার বোনের অবস্থা খারাপ হলে নার্সকে আসতে বলি। কিন্তু নার্স বলে এটা আমার ডিউটি না।আমি কোথাও যাব না। আপনারা যা পারেন করেন। প্রয়োজনে রোগী অন্য কোথাও নিয়ে যান। আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যাবহার করেছে ওই নার্স। আমার বোন মারা যাওয়ার আগে সারাদিনে কোন ডাক্তার আমার বোনকে দেখেনি। আমার বোন মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে একজন ডাক্তার এসেছিল।”
ইতির বোন কাজল রেখা বলেন, “রাতে ভর্তি করার পর ২য় তালায় ভালোই ট্রিটমেন্ট দিয়েছে। কিন্তু চার তলায় কোন ট্রিটমেন্ট হয় নাই। পাঁচবার ডাকার পরও নার্স আসে নাই। পরে আমার ভাই রাগ করে বলছে আপনারা কেমন নার্স। এতবার ডাকতেছি আসেন না কেন। পরে নার্স বলছে এটা আমাগো কাজ না। বইসা থাকা আমাগো কাজ। পরে একটা ডাক্তারের কাছে গেছে আমার ভাই তারপর সে আইসা টিপে টিপে দেখে ইসিজি করলো তারপর স্যালাইন দিলো তারপর একটু নড়াচড়া দিয়া দমটা বাইর হয়ে গেলো।”
তিনি আরো বলেন, “আমার বোন মারা যাওয়ার পর ওই নার্সকে ধরতে গেছি আমরা। কিন্তু ওরা ওই নার্সকে অন্য রুমে নিয়ে সরিয়ে রাখছে। ওইদিকে যাইতে গেলে ওয়ার্ডবয় সালমান ও সুমন আমাকে এবং আমার ছেলেকে মারধর করে। অন্য নার্সরা ওই নার্সকে গোপনে হাসপাতাল থেকে বের কইরা দিছে।”
তবে ওয়ার্ডবয় সালমান ও সুমন রোগীর স্বজনদের মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং সামান্য ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়েছে বলে জানান।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ঢাকায় আছি। ডাক্তার আশরাফ ও ডাক্তার জহিরুল করিম বিষয়টি দেখছেন। ওই নার্সের নাম এখন বলতে পারব না।”
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বলেন, “মেডিকেলে ঝামেলা হচ্ছে শুনে সেখানে ফোর্স পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।