ইসরায়েলে পাওয়া গেল ইসলামের প্রারম্ভিক যুগের বাড়ি, দেখুন ভাইরাল ছবিসহ

আবিষ্কার হওয়া বাড়িটির এরিয়াল ছবি। (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসলামের প্রারম্ভিক যুগের অষ্টম বা নবম শতাব্দিতে তৈরি রোমান-বাইজান্টাইন নকশার একটি বিলাসবহুল বাড়ি আবিষ্কার হয়েছে দক্ষিণ ইসরায়েলে। ইসরায়েলের প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েলের বেদুইন প্রধান শহর রাহাতের উত্তর নেগেভে নতুন বসতি নির্মাণের উদ্দেশ্যে উদ্ধার খননের সময় প্রায় ২০ ফুট খনন করার পর মাটির নিচ থেকে বাড়িটি আবিষ্কার হয়। প্রত্নতত্ত্বের দিক থেকে এটি একটি অসাধারণ নিদর্শন।

আবিষ্কার হওয়া বাড়িটির এরিয়াল ছবি। (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)
আবিষ্কার হওয়া বাড়িটির এরিয়াল ছবি। (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

সম্ভবত বছরের পর বছর ধরে এর মালিকদের রুচির পরিবর্তনের কারণে প্রায় ১২০০ বছর আগের এই স্থাপনাটির মূল নকশায় অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। সামাজিক রিতিনীতির কারণেও তা হতে পারে। আব্বাসিদের আমলে দেওয়ালগুলো সাদা প্লাস্টার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মূল নির্মানে সেখানে রঙিন পেইন্টিং ছিল বলে জানায় প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সাদা প্লাস্টারের নিচে মূল পেন্টিংসহ দেওয়ালের বিটগুলোও খুঁজে বের করেছেন তারা।

বাড়িটির মাটির নিচে আবিষ্কার হওয়া কক্ষ।  (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)
বাড়িটির মাটির নিচে আবিষ্কার হওয়া কক্ষ। (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

৩০ বাই ৩০ মিটার আয়তনের বাড়িটির বেশিরভাগই হারিয়ে গেছে। মূল দেওয়ালের মাত্র আধা মিটার এখন দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু প্রত্নতাত্ত্বিকরা মাটির নিচে স্থানীয় চুনাপাথরের ব্লক দিয়ে নির্মিত আড়াই মিটার উচ্চতার অনেকগুলো কক্ষ খুঁজে পেয়েছেন।

খননের স্থান (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)
খননের স্থান (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

এগুলো ছাঁদের সাথে পাথরের খন্ড দিয়ে তৈরি টানেলের সাথে যুক্ত করা। এছাড়া সাড়ে তিন মিটার গভীর বিশালাকৃতির একটি চৌবাচ্চাও পাওয়া গেছে, যার নিচে খোঁদাই করা রয়েছে। তারা জানায়, এটি দুটি প্রাচীন মসজিদের মাঝে অবস্থিত।

আবিষ্কার হওয়া পানির চৌবাচ্চা (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)
আবিষ্কার হওয়া পানির চৌবাচ্চা (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

খনন কাজের নির্মাণ পরিচালক ডঃ নো ডি. মাইকেল আইএএ-এর পক্ষ থেকে ওরেন শ্মুয়েলি এবং ডঃ এলেনা কোগান-জেহাভির সাথে কাজ করছেন। মাইকেল বলেন, এর আগে নেগেভে এরকম কিছু পাওয়া যায়নি। জর্ডানে এই রকম ভবন পাওয়া গেছে,যা আসলে দুর্গ। তবে এখানে কখনও এরকম পাওয়া যায়নি। বাড়িটির পাঁচ থেকে দশ মিটার দূরত্বে একটি খামারবাড়িও পাওয়া গেছে, যা বাড়িটির আগেই নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা যায়।

দেওয়ালে করা রঙিন পেইন্টিং (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)
দেওয়ালে করা রঙিন পেইন্টিং (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

মাইকেল আরও বলেন, আমাদের কাছে এখন উত্তরের চেয়ে প্রশ্নের সংখ্যা বেশি। এগুলো আসলে কার ছিল? এখানে পাওয়া খামারের সাথে সাথে বাড়িটির কি সম্পর্ক? এরকম একটি বিলাসবহুল বাড়ির পাশে কেই বা চাষাবাদ করতো? মাটির নিচের কক্ষগুলো কি উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল? কারা এগুলো ব্যবহার করতো?

বাড়িটি থেকে উদ্ধার করা নিদর্শন (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)
বাড়িটি থেকে উদ্ধার করা নিদর্শন (ছবি: ইসরায়েল পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষ)

প্রকৌশলীরা এটিকে নিরাপদ ঘোষণা না করলে প্রত্নতাত্ত্বিকরা আর গভীরে খনন কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। মাটির ওপরে তেমন কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। সূত্র : হারেতজ।