রাশিয়ার সাইবেরিয়ার দক্ষিণ পাশে অবস্থিত সুপেয় পানির হ্রদ বৈকাল। প্রকৃতি নিজের খেয়ালে এই অপার সৌন্দর্য তৈরি করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাধু ও সুপেয় পানির হ্রদ হচ্ছে বৈকাল হ্রদ। বিশ্বের গভীরতম হৃদ হচ্ছে এটি। বিস্ময়কর এই হ্রদ নিয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হবে আজকের আর্টিকেলে।
এই হ্রদের আয়তন ৩১৭২২ বর্গ কিলোমিটার। আরো দৈর্ঘ্য ৬৩৬ কিলোমিটার। এর সর্বাধিক গভীরতা 5387 ফুট। ৯০ এর দশকে রাশিয়া ও আমেরিকা বৈকাল হ্রদের নানা স্থানে ড্রিল করে গবেষণা চালায়। এ গবেষণার ফলের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
বৈকাল হ্রদের চারপাশ পাহাড় ও পর্বত দিয়ে ঘেরা। হ্রদের উত্তর দিকে রয়েছে বৈকাল পর্বতমালা। এখানে ছোট-বড় মিলে ২৭ টি দ্বীপ রয়েছে। বিশ্বের যত সুপেয় পানির মজুদ রয়েছে তার ২২ থেকে ২৩ শতাংশ রয়েছে এখানে।
পৃথিবীর সবথেকে স্বচ্ছ পানির হ্রদ হিসেবে বিবেচিত হয় বৈকাল হ্রদ। শীতকালে ৩০ থেকে ৪০ মিটার গভীর পর্যন্ত খালি চোখে দেখা যায় এটি। এরা অনেক বেশি অক্সিজেনের সমৃদ্ধ এবং তার উপস্থিতি গভীর পর্যন্ত পাওয়া যায়।
শীতকালে হ্রদের উপরিভাগের পানির জমে বরফে পরিণত হয়। বৈকাল হ্রদ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ভান্ডার। ১০০০ এর বেশি উদ্ভিদ এবং প্রাণিকুলের বৈচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। হ্রদের আশি শতাংশ প্রাণীকুল স্থানীয় যা অন্য কোথাও দেখা যায় না।
হ্রদের আশেপাশে এরকম ইউনিক উদ্ভিদ রয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এ হ্রদে সবুজ শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদের আধিক্য বেশি। মিঠাপানির সিল এখানে দেখতে পাওয়া যায়। ইউরেশিয়ান ভালুক, ইউরেশিয়ান নেকড়ে ও বিশেষ খরগোশ জাতীয় প্রাণী এখানে দেখতে পাওয়া যায়।
লাল শিয়াল, কস্তুরী হরিণ ও কাঠবিড়ালেীর নানা প্রজাতি বৈকালের চারপাশে দেখতে পাওয়া যায়। ২৩৬ প্রজাতির পাখির বাসা রয়েছে এখানে। হ্রদের অববাহিকায় ৬৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। স্থানীয়রা মাছ বাজার বিক্রি করে থাকেন।
সাধু পানির শামুকসহ বিভিন্ন পোকা জাতীয় প্রাণীর বাস রয়েছে বৈকাল হ্রদে। ৫ হাজার ফুট গভীর পর্যন্ত জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব রয়েছে। বৈকাল হ্রদের আশেপাশে বিভিন্ন উপজাতি নিয়ে চমৎকার গল্প এবং ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে।
রাশিয়ার সরকার এটিকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেন। সাইবেরিয়ার মুক্তা নামে পরিচিত অঞ্চলটি পর্যটকদের জন্য বেশ আকর্ষণীয় স্থান। বৈকালের হ্রদ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণায় রাশিয়ার সরকার কোন কমতি রাখেনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।