জুমবাংলা ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ঈদে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। প্রতিদিন বাস, ট্রেন, লঞ্চ-সবখানেই ঘরমুখো মানুষের ভিড়। গত কয়েক দিনের তুলনায় শনিবার (৬ এপ্রিল) বেশিসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। তবে এবারের ঈদযাত্রা অনেকটা স্বস্তিদায়ক। ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখগুলোতে যানজট থাকলেও দূরযাত্রায় দুর্ভোগ নেই।
রাজধানীর মহাখালী, গাবতলি, কল্যাণপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর ও গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক সড়কগুলোতে যানজট দেখা গিয়েছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মোটামুটি সব ট্রেনই সময়মতো ছেড়েছে।
কয়েকটি বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীর ভিড় বেড়েছে। নির্ধারিত সময়ে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ করেছে যাত্রীরা। মহাসড়কে টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটার যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের প্রায় ৭০০ সদস্য।
নৌপথে শুরুর দিকে যাত্রী কম থাকলেও এখন সদরঘাটে যাত্রীর বিচরণ বেড়েছে। লঞ্চের সংখ্যাও বাড়িয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়কে যানজটে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২৮ হাজার ৭১০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকা। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপ্রান্ত অর্থাৎ টাঙ্গাইল অংশে ১৬ হাজার ৪৭৪টি যানবাহন পারাপারের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ টাকা এবং সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে সিরাজগঞ্জ অংশে ১২ হাজার ২৩৬টি যানবাহন পারাপারের বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
এদিকে ঈদ সামনে রেখে সাসেক-২ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে নির্মিত একটি রেল ওভারপাস, সাতটি ওভারপাস ও দুটি সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের টোল প্লাজার সব লেনে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) কার্যক্রম চালু করাসহ মেঘনা সেতু টোল প্লাজা-২-এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
একসময় শিমুলিয়া ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো ফেরি পারাপারের জন্য। পদ্মা সেতু হওয়ায় এখন আর সেই চিত্র নেই। ভোগান্তি ছাড়াই দ্রুত পার হচ্ছে মানুষ।
রবিবার (৭ এপ্রিল) সকালে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, চেকিং এর আওতায় এসে শত শত মানুষ স্টেশনে প্রবেশ করছেন। সবার সঙ্গেই রয়েছে ট্রেন যাত্রার টিকিট। কারো কাছে টিকিট না থাকলে তাকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুরো বিষয়টি স্টেশনে দাঁড়িয়ে তদারকি করছেন।
যাত্রীদের প্রত্যাশা, সারা বছর যদি রেলওয়ে এমন সার্ভিস দেয় তাহলে টিকিট বিহীন যাত্রী কমে যাবে। এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগে স্টেশনে চলে আসায় প্লাটফর্মে অনেক যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
লালমনিরহাটগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের একজন যাত্রী বলেন, জেনেছি ট্রেনটি ছাড়তে ১৫ মিনিট বিলম্ব হবে। এ নিয়ে তেমন কোনো আক্ষেপ নেই। কারণ সুন্দর একটি পরিবেশের মধ্য দিয়ে স্টেশনে আসতে পেরেছি এবং ট্রেনে উঠতে পেরেছি। লালমনিরহাট অনেকটা দূরের পথ। ঈদ ছাড়াও যে কোনো সময় এই পথে বাসে যাতায়াত অনেক কষ্টকর। ভাগ্যক্রমে অনলাইন থেকে টিকিট কাটতে পেরেছি। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতেই সেখানে যাওয়া।
রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আমির হোসেন সিফাত বলেন, উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের জন্য ট্রেন একমাত্র ভরসা। যমুনা সেতুতে যে পরিমাণ গাড়ির জট হয় ঈদের আগে এটি খুবই ভোগান্তির। এ বছর খুব সহজে অনলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করা গেছে। আশা করি তেমন কোনো ভোগান্তি হবে না।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৪টি ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। গতকাল ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট বিলম্ব করা রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস আজ ঠিক সময় সকাল ৬টায় ঢাকা স্টেশন ছেড়েছে।
জানা গেছে, গত চার দিনের তুলনায় আজকে পঞ্চম দিনের মানুষের ভিড় অনেক বেশি রয়েছে। বিকেলের ট্রেনগুলোতে হয়তো আরও বেশি যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে।
হারিয়েছে দৃষ্টিশক্তি, মনের জোরে জীবন পার! রাজকুমার রাওয়ের প্রশংসায় নেটপাড়া
ঈদ উপলক্ষে ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সেগুলো হলো-গ্যাস সিলিন্ডার অথবা গ্যাসের লাইন, পানির লাইন, সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে বের হতে হবে। বাসাবাড়িতে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে এসে দরজা-জানালা খুলে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের না হওয়া পর্যন্ত কোনো অবস্থাতেই গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ অন করা যাবে না। বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। আগে বসানো সিসি ক্যামেরা সচল আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে। বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালংকার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রাখতে হবে। রাতে কিংবা দিনে একসঙ্গে মুখে মাস্ক এবং মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।