এশিয়ায় ভ্রমণকারীদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য মালয়েশিয়া। সমুদ্র, পাহাড়, দ্বীপ কী নেই দেশটিতে? কুয়ালালামপুরের আকাশচুম্বী অট্টালিকা থেকে শুরু করে সেলাঙ্গরের অপূর্ব বাতু গুহা কিংবা লঙ্কাউইর নান্দনিক সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের আরও কিছুদিন থেকে যেতে প্রলুব্ধ করে। তবে শুধু ভ্রমণ নয়, চাইলে মালয়েশিয়াকে নিজের স্থায়ী ঠিকানা বানানো সম্ভব। দেশটি এখন স্থায়ী আবাসন (পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি বা পিআর) দিচ্ছে। বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা কিছু শর্তে এই আবেদন করতে পারবেন।
মালয়েশিয়ার পিআর কী
মালয়েশিয়ায় কোনো বিদেশি পিআর পেলে তিনি দেশটিতে বসবাস, কাজ এবং পড়াশোনার অনুমতি পাবেন। যদিও এটি নাগরিকত্বের সব সুবিধা দেয় না, যেমন ভোটাধিকার পাওয়া যায় না। তবে পিআরধারী ব্যক্তিরা স্থানীয়দের মতো স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
কারা আবেদন করতে পারবেন
মালয়েশিয়ায় পিআর সবাইকে দেওয়া হয় না। এটি খুব যাচাই-বাছাই করা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদন করা হয়। যেসব শর্তে আবেদন করা যাবে–
• বৈধ এমপ্লয়মেন্ট পাসে অন্তত ৫ বছর মালয়েশিয়ায় কাজ করেছেন এমন দক্ষ পেশাজীবী অথবা দেশটির সরকারি সংস্থার সুপারিশ পেয়েছেন।
• বিদেশি বিনিয়োগকারী যারা অন্তত ৫০ লাখ রিঙ্গিত (প্রায় ২০ লাখ মার্কিন ডলার) মালয়েশিয়ার কোনো ব্যাংকে ৫ বছরের জন্য স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখেছেন।
• যেসব বিদেশির বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, চিকিৎসা বা শিল্পকলা বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে।
• বিদেশি নাগরিক যারা মালয়েশিয়ার নাগরিককে বিয়ে করেছেন এবং টানা ৫ বছর সেখানে বসবাস করেছেন।
এ ছাড়া মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম (এমএম২এইচ) নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি আছে, যা সরাসরি পিআর না হলেও দেশটিতে টানা ১০ বছর বসবাসের সুযোগ দেয়। নির্দিষ্ট আর্থিক শর্ত পূরণকারীদের জন্য এটি ভবিষ্যতে পিআর পাওয়ার একটি উপায়।
আবেদন করতে যা যা লাগবে
পিআর আবেদন প্রক্রিয়া পরিচালনা করে থাকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ। আবেদন করতে যা যা লাগবে–
• পূর্ণাঙ্গ পিআর আবেদনপত্র
• বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসার কপি
• চাকরি, বিনিয়োগ ও বিয়ের প্রমাণপত্র
• প্রাসঙ্গিক মন্ত্রণালয়ের সুপারিশপত্র
• আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্র
আবেদনের প্রক্রিয়া
১. প্রথমে নিজের যোগ্যতা যাচাই করুন।
২. প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র সংগ্রহ করুন।
৩. সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বা অবদান রাখার প্রমাণপত্র নিন।
৪. আবেদন জমা দিন পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন দপ্তরের প্রধান কার্যালয় বা প্রাদেশিক অফিসে। এ সময় প্রসেসিং ফি হিসেবে দিতে হবে ৫০০ রিঙ্গিত।
৫. এরপর ইমিগ্রেশন কমিটি আবেদন পর্যালোচনা করবে।
৬. অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২ থেকে ৫ বছর।
৭. আবেদন অনুমোদিত হলে পিআর প্রবেশ ফি দিতে হবে ১ হাজার ৫০০ রিঙ্গিত। পরিবারের সদস্যদের জন্য বাড়তি ফি দিতে হতে পারে।
সব প্রক্রিয়া শেষ হলে আবেদনকারীকে একটি ব্লু পরিচয়পত্র (মাই পিআর কার্ড) দেওয়া হবে, যা মালয়েশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করবে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট অব মালয়েশিয়া
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।