বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : অনেকেই নতুন ফোন কেনার পর বুঝতে পারেন না যে, সেটি সত্যিই নতুন নাকি পূর্বে ব্যবহৃত। বাজারে কিছু অসাধু বিক্রেতা পুরাতন ফোনকে ভালোভাবে রিফারবিশ করে নতুন বলে বিক্রি করে।
Table of Contents
ফলে, ক্রয়ের পর বেশ কিছুদিন ব্যবহার করার পর ক্রেতা বুঝতে পারেন যে, তার ফোনটি একেবারে নতুন ছিল না। তাই ফোন কেনার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, স্মার্টফোনের নতুনত্ব যাচাই করার কার্যকর কিছু উপায়।
১. প্যাকেজিং ও সিল পরীক্ষা করুন
নতুন ফোনের প্যাকেজিং থাকে সম্পূর্ণ অক্ষত এবং সিলযুক্ত।
- ফোনের বক্সে থাকা লেবেল, মডেল নম্বর, রঙ ও আইএমইআই নম্বর যাচাই করুন।
- আইফোনের ক্ষেত্রে প্লাস্টিক মোড়ক থাকে নিখুঁতভাবে, আর ভিভো ডিভাইসে ব্র্যান্ডেড স্টিকার থাকে, যা একবার খোলা হলে তা বোঝা যায়।
- যদি প্যাকেজিংয়ের সিল খোলা বা অস্বাভাবিক মনে হয়, তাহলে সেটি পুরাতন বা রিফারবিশড হতে পারে।
২. বাহ্যিক অংশ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন
- স্ক্র্যাচ, দাগ বা ছোটখাটো ডেন্ট থাকলে বুঝতে হবে এটি ব্যবহৃত।
- ক্যামেরার লেন্স, চার্জিং পোর্ট ও স্পিকার গ্রিল চেক করুন। পুরাতন ফোন হলে ধুলোর অস্তিত্ব থাকতে পারে।
- ওয়ানপ্লাস ও অপ্পো মডেলের ধাতব ফ্রেম মসৃণ থাকে, ফলে সামান্য ব্যবহারের চিহ্নও ধরা পড়ে।
৩. সিরিয়াল নম্বর ও আইএমইআই যাচাই করুন
- *#06# ডায়াল করে ফোনের আইএমইআই নম্বর বের করুন এবং সেটি বক্সের নম্বরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন।
- অ্যাপলের ওয়েবসাইটে সিরিয়াল নম্বর দিয়ে আইফোনের অ্যাক্টিভেশন স্ট্যাটাস চেক করা যায়।
- ভিভো, রিয়েলমি ও অন্যান্য ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটেও ওয়ারেন্টি ও অ্যাক্টিভেশনের তথ্য যাচাই করা সম্ভব।
৪. ব্যাটারির চার্জ পরীক্ষা করুন
নতুন ফোন সাধারণত ১০০% চার্জযুক্ত থাকে না।
- ফোন চালু করে ব্যাটারি চার্জ চেক করুন। যদি ১০০% হয়, তাহলে এটি ব্যবহৃত হতে পারে।
- অ্যান্ড্রয়েডের ##৪৬৩৬## কোড ডায়াল করে ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।
৫. সফটওয়্যার ও ফ্যাক্টরি রিসেট পরীক্ষা
- নতুন ফোনে সর্বশেষ ফার্মওয়্যার ও প্রি-ইনস্টলড অ্যাপস থাকে।
- ফোন রিসেট করার পরও যদি থার্ড-পার্টি অ্যাপ থাকে, তাহলে ফোনটি ব্যবহৃত।
- পুরাতন সংস্করণের সফটওয়্যার থাকলে বুঝতে হবে এটি আগে চালু ছিল।
৬. ওয়ারেন্টি ও অ্যাক্টিভেশনের তারিখ যাচাই
- ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে সিরিয়াল নম্বর দিয়ে চেক করুন ফোনটি প্রথম কবে চালু করা হয়েছে।
- নতুন ফোন হলে ওয়ারেন্টির শুরু হওয়া উচিত কেনার তারিখ থেকে।
৭. মেরামতের চিহ্ন খুঁজুন
- স্ক্রুগুলোর অবস্থান ও সংযোগ চেক করুন। পুরাতন ফোন হলে স্ক্রুগুলো আলগা বা আঁচড়ের চিহ্ন থাকতে পারে।
- কিছু ব্র্যান্ডের ফোনে বিশেষ স্ক্রু থাকে, যা পরিবর্তিত হলে সহজেই বোঝা যায়।
৮. ফোনের আনুষঙ্গিক সামগ্রী যাচাই
- চার্জার, কেবল, ইয়ারফোন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিস যাচাই করুন।
- আইফোন, ওয়ানপ্লাস ও রিয়েলমির মতো ব্র্যান্ডের আনুষঙ্গিক সামগ্রী নকল হলে সহজেই ধরা পড়ে।
৯. হার্ডওয়্যার ও সফ্টওয়্যার পরীক্ষা করুন
- আইফোনে ডায়াগনস্টিক মোড চালু করতে পাওয়ার-অফ অবস্থায় ভলিউম আপ ও ডাউন বোতাম চেপে ধরে চার্জারে সংযুক্ত করুন।
- অ্যান্ড্রয়েডের ##৪৬৩৬## কোড দিয়ে হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করুন।
১০. ক্রয়ের রশিদ ও নথিপত্র যাচাই
- অফিসিয়াল বিক্রেতার কাছ থেকে ফোন কিনলে ইনভয়েস ও ওয়ারেন্টি কার্ড পাওয়া যায়।
- ফোনের ওয়েবসাইটে সিরিয়াল নম্বর দিয়ে যাচাই করুন তথ্যগুলো সঠিক কিনা।
Nothing 3a এবং 3a Pro : নাথিং নিয়ে এলো নতুন স্বচ্ছ স্মার্টফোন
স্মার্টফোন কেনার পর সেটি আসলেই নতুন কিনা, তা যাচাই করা খুবই জরুরি। প্যাকেজিং, বাহ্যিক গঠন, সিরিয়াল নম্বর, সফটওয়্যার ও ওয়ারেন্টি পরীক্ষা করলে সহজেই ফোনের নতুনত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই নতুন ফোন কেনার সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন, যাতে প্রতারণার শিকার না হন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।