জুমবাংলা ডেস্ক : বছর দুয়েক আগে সিনথিয়া ইসলাম খুসবুকে (২৪) বিয়ে করেন আক্কাস আলী রনি (২৬)। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চলছিল কলহ। গত মঙ্গলবার (১১ জুন) রাতে ফেনী পৌরসভার চর গণেশ এলাকার ভাড়া বাসায় তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর পরের দিন বুধবার (১২ জুন) ভোরে সিনথিয়াকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন আক্কাস।
গত বুধবার সকালে পৌরসভার চর গণেশ এলাকার ভাড়া বাসায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী সিনথিয়াকে বঁটি দিয়ে জবাই করে হত্যার পর মরদেহ বিছানায় ফেলে রেখে থানায় গিয়ে নিজেই পুলিশে খবর দেন স্বামী আলী আক্কাস।
আক্কাস আলী রনি ভোলার দৌলতখান থানার মধ্য জয়নগর এলাকার মো. রতনের ছেলে। বিয়ের পর এই দম্পতি ফেনীর সোনাগাজীতে বসবাস শুরু করেন। আক্কাস ফেরি করে জিনিসপত্র বিক্রি করে সংসার চালাতেন।
সিনথিয়ার মা লিপি আক্তার বলেন, ‘সিনথিয়া পরিবারের অমতে আক্কাসকে বিয়ে করেছে। শুরুতে মেনে না নিতে পারলেও কিছুদিন পর আমরা তাদের ঢাকার বাসায় চলে আসতে বলি। যাবে যাবে বলেও তারা আর যায়নি। বেশ কিছুদিন ধরে আক্কাস ব্যবসা করার জন্য সিনথিয়ার মাধ্যমে টাকা চাইতে থাকে।
আমরা বলেছি, তোমরা ঢাকায় চলে এসো, এরপর টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু ঢাকায় না গিয়ে আক্কাস সিনথিয়াকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার পর সিনথিয়া আমাকে বারবার ফোন করতে থাকে। ফোন ধরার পর জানায়, আক্কাস তাকে টাকার জন্য খুব মারধর করছে। এরপর রাত সাড়ে তিনটার দিকে মেয়ে আবারও ফোন দিয়ে বলে, ‘মা, আমার ফোন বন্ধ থাকলে বুঝবা, তোমাদের জামাই আমারে মেরে ফেলেছে।
’ সকাল হতে না হতেই থানা থেকে পুলিশ ফোন করে জানায়, আমার মেয়েকে আক্কাস জবাই করে হত্যা করেছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে সিনথিয়ার মরদেহ দাফনের জন্য ঢাকায় নিয়ে যায় তার পরিবার। এ ঘটনায় সিনথিয়ার মা লিপি আক্তার বাদী হয়ে আলী আক্কাসকে আসামি করে রাতেই থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, সিনথিয়ার মুঠোফোন থেকে একটি কাবিন উদ্ধার করা হয়েছে। ওই কাবিনে লেখা হয়েছে, এক লাখ টাকা দেনমোহরে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর আলী আক্কাসকে তিনি বিয়ে করেছেন। কিন্তু চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্কাসের কাছে চলে আসার পর মাকে জানান যে ওই দিনই তারা বিয়ে করেছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শৈবাল বড়ুয়া বলেন, গতকাল দুপুরে সিনথিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আলী আক্কাসকে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ আশিকুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে আক্কাস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।