জুমবাংলা ডেস্ক : পিলখানায় বাবা মেজর মোসাদ্দেক যখন হত্যার শিকার হন তখন লাইকা পড়তেন ক্লাস ওয়ানে। ভয়াবহ ওই ঘটনার তখন কিছুই বুঝতেন না ছোট্ট লাইকা। কিন্তু গত ১৫ বছরে একটু-একটু করে জানতে পারেন কী ঘটেছিল তার বাবার ভাগ্যে। তারুণ্যে এসে, বাবার হত্যার বিচার দাবিতে কণ্ঠ উঁচু করলেন তিনি।
লাইকা বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সময় আমার ৯ বছর বয়স ছিল। তখন না বুঝলেও পরবর্তীতে আমি বুঝতে পারি এটা সাধারণ মৃত্যু না। আশেপাশে যে মানুষগুলোকে টিভিতে দেখতাম, যাদের কথা শুনতাম আসলে তারাই এর সাথে জড়িত ছিল।
শুধু লাইকাই নয়, ওইদিন হত্যাকাণ্ডের শিকার ৫৭ সেনা সদস্যের পরিবারেরও একই দাবি। রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনঃ তদন্ত-সহ ৭ দফা দাবি জানান তারা। অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন করেছিল শেখ হাসিনা সরকার। অথচ পুরো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী খোদ শেখ হাসিনা। সহযোগিতায় ছিলেন- শেখ সেলিম, শেখ ফজলে নূর তাপসসহ তার দলের নেতারা।
মেজর জেনারেল শাকিলের ছেলে রাকিন আহমেদ বলেন, ‘নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। অনেক সেনা অফিসার বিচার চাইতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন। কেউ কেউ জেলে গেছেন। দরবারের শত শত অফিসারের জীবন ধ্বংস করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সেনা অফিসারদের পরিবারকে যেন যথাযথ সম্মান ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। যেসব নির্দোষ, দেশপ্রেমিক বিডিআর সৈনিক জেল খাটছেন, সুষ্ঠু তদন্তে যেন তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আওয়ামী লীগ নেতা ফোন করে আমাকে বলেছিলেন, ওনার নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমার বাবা-মাকে জবাই দিয়েছেন। যদি বেশি বাড়াবাড়ি করি তাহলে বাবা-মার মতো আমাকেও জবাই দিয়ে দেবে।’
রাকিন বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে জানা নেই, যেখানে রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) অন্য একটা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাজধানীতে ৫৭ সেনা অফিসারকে হত্যা করে। ওই দিনটিকে আমরা শহীদ সেনা দিবস দাবি করছি। গত ১৫ বছরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের ট্রায়াল বা তদন্তকে আমরা মানি না। কারণ, প্রধান যে হত্যাকারী, নির্দেশদাতা তিনি তখন ক্ষমতায় ছিলেন। খুনি কি তাঁর নিজের বিচার করবে? মুখ বন্ধ করে দেখতে হয়েছে, কেমন করে তদন্ত, ট্রায়াল প্রভাবিত করল, ডাল–ভাতের কথা বলল। নীরবতায় সহ্য করতে হয়েছে।’
এ সময় তিনি দাবি করে বলেন, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত শেখ হাসিনা, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম। নাটক সাজানোর নামে রহস্যশালা আর চাই না।’
১৮ লাখ টাকাসহ রহস্যময় ধাতব বস্তু পেলো শিক্ষার্থীরা, থানায় জমা
ভয়াবহ ওই হত্যাকাণ্ড থেকে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি লোমহর্ষক সেদিনের বর্ণনা দেন। লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুজ্জামান বলেন, তারা এসে ডিজি কে প্রথমেই গুলি করে। ডিজির বুকে ২টা গুলি লাগার সাথে সাথে তিনি ডানদিকে হেলে পরে যান। পরে আরও দুটি গুলিস ওনার গায়ে লাগে। এ সময় আমরা যারা লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম, সবাই মিলে তার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা ব্রাশ ফায়ার করা শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচারের জন্য নতুন তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান, এই সেনা কর্মকর্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।