জুমবাংলা ডেস্ক : ঘোষণা দিয়ে, অনেকটা আয়োজন করেই ঢাকা মহানগরীতে চালু হয়েছে কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস। নতুন পদ্ধতিতে গাজীপুর-ঢাকা সড়কের বিভিন্ন রুটে প্রথম অবস্থায় ২১টি কোম্পানির ২ হাজার ৬১০টি বাস নিয়ে যাত্রা শুরুর কথা বলা হয়। আর সবগুলো গাড়ির রঙ হবে ‘গোলাপি’। তবে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে ‘গোলাপি বাস’ সার্ভিস।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে নতুন পদ্ধতিতে এসব বাস চলাচলের প্রথম পর্বের উদ্বোধন করা হয়। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম সে সময় কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তবে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে কাউন্টার পদ্ধতির যাত্রী পরিষেবা গোলাপি বাসের এ সার্ভিস। কেবল কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে এরই মধ্যে বিক্ষোভ করেছেন একদল বাস শ্রমিক। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
উদ্বোধনী দিনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেছিলেন, ‘যাত্রীদের সেবার মান উন্নয়নে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোসহ যানজট নিরসনেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে ভাড়ায় কোনো তারতম্য ঘটবে না। শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়ায় আগে যেভাবে যেতেন, সেভাবেই যাবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কন্ট্রাক্ট সিস্টেমে এখন থেকে কোনো বাস চলাচল করবে না। যাত্রীরাও লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট স্থান থেকে টিকিট কেটে বাসে উঠবেন। বাস স্টপেজ ছাড়া দাঁড়াবে না গাড়ি। যাত্রী ওঠানামাও করবে নির্দিষ্ট স্থান থেকে।’
কাউন্টারে অভিযোগ নম্বর থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাসে চলাচল নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ থাকলে তা করতে পারবেন।’
তবে বাস শ্রমিকদের বিক্ষোভের পর ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বলাকা ও তুরাগ পরিবহনের শ্রমিকরা কাউন্টার পদ্ধতিতে বাস চালাতে অসহযোগিতা করছেন। তারা বলছেন, তাদের বেতন কম। কাউন্টারে চালালে এলোমেলো করতে পারে না। যেখানে-সেখানে যাত্রী তুললে টাকা বেশি পায় তারা। এই কারণে তারা কাউন্টারে চালাবে না, কাউন্টারে চালালে তাদের (বেতনের) টাকা বেশি দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা দাবি করছে, পুলিশের হাতে তারা হয়রানির শিকার হয়। ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন বাতিলেরও দাবি জানায় তারা। এসব কারণে তারা সড়ক অবরোধ করেছিলেন।’
এদিকে আজ মঙ্গলবার দেখা যায়, রাজধানীর সায়েদাবাদ, মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা এলাকায় সড়কের পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন বহু মানুষ। দুই একটা বাসের দেখা মিললেও তাতে উঠার মতো পরিস্থিতি নেই। অনেকেই বাসের দেখা না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। আর যাদের সামর্থ্য আছে তারা রিকশা, সিএনজি বা রাইড শেয়ারের মাধ্যমে গন্তব্যে ছুটছেন।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন চালক বলেন, ‘গোলাপি রং করতে গিয়ে অনেক বাসই নামেনি রাস্তায়। আর ই-টিকিটিংয়ে চালক-হেলপারের ক্ষতি হচ্ছে বলে অনেকে বাস চালাচ্ছেন না। চালক, শ্রমিকরা আগের মতো যেখানে-সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামার সুযোগ চান।’
তবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, ‘যানজট নিরসন ও পরিবহন খাতে নৈরাজ্য রোধে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামার সুযোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। নিয়ম মেনেই চলতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।