জুমবাংলা ডেস্ক : সরকারের চলমান আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আজ সকালে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপহার হিসেবে এ বাড়িগুলো হস্তান্তর করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চারটি উপজেলায় ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন। তিনি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খোকশাবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।
সরেজমিনে কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগে নতুন বাড়িতে উঠতে পারবেন বলে আনন্দিত গৃহহীন ও ভূমিহীনরা। তাঁরা দীর্ঘদিনের ভাসমান জীবনের অবসান ঘটিয়ে নতুন জীবনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিজের বাড়িতে প্রথম ঈদ তাঁদের জীবনে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্পে সঙ্গে কথা হয় সদ্যোবিধবা শারমীন আক্তারের। তিনি জানান, ১৭ দিন আগে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি নতুন বাড়িতে উঠবেন।
শারমীন আক্তার বলেন, ‘আমরা প্রেম করে বিয়ে করায় পরিবার থেকে মেনে নেয়নি। ফলে দীর্ঘদিন অভাব-অনটনের মধ্যে জীবন পার করছি। আমার স্বামী ছয় মাস আগে স্ট্রোক করে অসুস্থ হন। এরপর ১৭ দিন আগে দ্বিতীয় স্ট্রোকে মারা গেছেন। দুঃখের বিষয় তিনি নতুন বাড়িতে উঠতে পারলেন না। আমার স্বামী মারা যাওয়ার আগে বলে গেছেন, আমার জীবনের আয়ু যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পান। ’
হাজিগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাচ্ছেন মোহাম্মদ নেজাম। পেশায় রাজমিস্ত্রি নেজাম এত দিন ঘরজামাই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘জীবনের বেশির ভাগ সময় অন্যের বাড়িতেই কাটালাম। শেষ জীবনে এসে নিজের বাড়িতে থাকতে পারছি, এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। ’
হাজিগাঁও প্রকল্পে বাড়ি পাচ্ছেন খুশিদা বেগম। তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তিনি আশ্রয়ণের বাড়িতে উঠবেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েকে নিয়ে নতুন বাড়িতে উঠছি, অনেক আনন্দ লাগছে। ’
১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে বাড়ি, জমি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েন ইয়ার মোহাম্মদ। এরপর তাঁর আশ্রয় হয় সমুদ্রপারের বেড়িবাঁধের ওপরে। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় জমিসহ বাড়ি পেয়ে খুশি ইয়ার মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তাঁর জন্যই আমরা নতুন বাড়িতে ঈদ করতে পারব। ’
আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় বাড়ি প্রদান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন যে বাংলাদেশের কোনো মানুষ যেন ভূমিহীন, গৃহহীন না থাকে। সে জন্য তিনি দুই শতক জমির ওপর দুই কক্ষের একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন। এসব ঘরের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রণয়ন করেছেন।
তোফাজ্জল হোসেন জানান, প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬০ হাজার ১৯১টি ঘর এবং ২০ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত মোট ঘরের সংখ্যা এক লাখ ১৭ হাজার ২৯টি। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণাধীন একক ঘরের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭৪টি।
তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এই যে ঘর দেওয়া হচ্ছে এগুলো স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে। যাঁর স্বামী নেই, সে ক্ষেত্রে স্ত্রীর নামে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে প্রায় ৩৩ হাজার ঘর হস্তান্তর করবেন তাতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ, যাদের একটি ঠিকানা ছিল না, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, তারা এখন ঠিকানা পাচ্ছে। সূত্র : কালের কণ্ঠ।
কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ-ডেনমার্ক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।