জুমবাংলা ডেস্ক : লালমনিরহাটের আদিতমারী থানার ভিতরে স্বামীর সামনে বিষ পানে আত্মহত্যা চেষ্টা করেছেন গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন (২৩)। বৃহস্পতিবার বিকেলে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আহত গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শঠিবাড়ি এলাকার রুবেল মিয়ার স্ত্রী। একই উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ি ভেটেশ্বর গ্রামের ইসলাম মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় সাবিনা ইয়াসমিনকে দুই বছর আগে বিয়ে করেন রুবেল মিয়া। দুই স্ত্রীর কারনে প্রায় সময় সংসারে বিবাদ লাগেই থাকত। অবশেষে কৌশলে দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে তার বাবার বাড়িতে রাখেন স্বামী রুবেল। বিবাদ এড়াতে বাবার বাড়িতে থাকলেও সাবিনার কোন খোঁজ খবর রাখতেন না স্বামী রুবেল। এ নিয়ে দু’জনের মাঝে সম্পর্কের দুরুত্ব তৈরী হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশেষ আলাপ করতে আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের শীববাড়ি এলাকায় সাবিনাকে ডেকে নেন স্বামী রুবেল। এ সময় তাদের মাঝে আলাপের এক পর্যয়ে বেশ বিতর্ক বাঁধে। তখন স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে আদিতমারী থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষের পরিবারের উপস্থিতিতে আপাতত দুই পরিবার তাদের দুইজনের দায়িত্ব নিয়ে বাড়িতে ফিরার সিদ্ধান্ত হয়।
এ সময় সাবিনা ইয়াসমিন তার স্বামীর সাথে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। কিন্তু তাতে রাজি হননি স্বামী রুবেল মিয়া। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে থানার বাহিরে এসে বিষ কিনে পুনরায় থানার ভিতরে ঢুকে শেষ বারের মত স্বামীর সাথে যেতে স্বামীর অনুমতি প্রার্থনা করেন সাবিনা। কিন্তু তাকে বাড়িতে তো নয়, তালাকের প্রস্তাব দিলে স্বামী ও থানা পুলিশের সামনে বিষ পানে করেন সাবিনা। বিষয়টি বুঝতে পেয়ে থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক ভাবে আহত সাবিনা ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে বেডে থাকা গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, দুই বছর সংসার করার পর যদি স্বামী তালাক দেয়ার ঘোষনা দেন। তাহলে এই জীবন রেখে কি লাভ ?তাই থানার ভিতরে স্বামী ও একাধিক পুলিশের সামনেই বিষ খেয়েছি মরার জন্য। কিন্তু পুলিশের কারনে মরতেও পারলাম না। স্বামী তালাক দিলে আমি আত্মহত্যা করব।
আহত গৃহবধূর স্বামী রুবেল মিয়া বলেন, আপাতত নিজ নিজ বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাকে তালাক দেয়া হয়নি। কিন্তু আমার সাথে যেতে না পেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন থানার ভিতরে আমার ও পুলিশ সদস্যদের সামনেই বিষ পান করেছে।
আদিতমারী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার সৌরভ দত্ত বলেন, সাবিনা ইয়াসমিনের পাকস্থলি ওয়াশ করে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আপাতত আশংকা মুক্ত রয়েছেন।
আদিতমারী থানার ওসি মোক্তারুল ইসলাম বলেন, তাদের দুই পরিবার বসে তাদের বিবাদের নিস্পত্তি করেছেন বলে শুনেছি। এরপর এমন ঘটনা ঘটলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.