মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর)।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় দেবেন। কিন্তু রায়ের পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও ক্ষুব্ধ হলে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল আবেদন করতে পারবেন। নিয়ম অনুযায়ী রায় ঘোষণার ত্রিশ দিন বা এক মাসের মধ্যে গ্রেফতার আসামিরা আপিল আবেদন করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষও আপিল বিভাগে যেতে পারবে। কিন্তু পলাতক আসামিদের বিষয়ে কী হবে বা আইনের বিধান কী এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হোসাইন তামিম বলেন, এই মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। তাদের সাজা হলে আপিল করার সুযোগ অবশ্যই থাকবে না।
রোববার (১৬ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হোসাইন তামিম সাংবাদিকদের এমন কথা জানান।
তিনি বলেন, এ মামলার যেসব আসামি পলাতক, তারা গ্রেফতার হওয়া ছাড়া আপিল করতে পারবেন না।
মামলার প্রধান আসামি একজন নারী। নারী হওয়ার কারণে আইনে বিশেষ কোনো সুবিধা তিনি পাবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিআরপিসিতে জামিনের ক্ষেত্রে নারী, অসুস্থ, কিশোর, বালক, শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীকে সাধারণ আইনেও কোনো আলাদা প্রিভিলেজ (অগ্রাধিকার) দেওয়া হয় না। ট্রাইব্যুনাল আইনেও কোনো আলাদা প্রিভিলেজ নেই। অতএব রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে আসামি নারী হোক, পুরুষ হোক, তিনি তার অবস্থানে থেকে কী অপরাধ করেছেন, সেই অপরাধের গ্র্যাভিটি বিবেচনা করে শাস্তি দেওয়া হবে বা মামলা প্রমাণ না হলে খালাস দেওয়া হবে।
এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, এই মামলায় যে রায় ঘোষণা হবে, আমরা নরমালি দেখি যারা গ্রেফতার ও নিজস্ব আইনজীবী আছেন,তারা অসন্তুষ্ট হলে আপিল বিভাগে যান। এক্ষেত্রে তো স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আছে। সেই প্রক্রিয়াটা কী হবে?
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর বলেন, এর আগে এই ট্রাইব্যুনালে যে আরও ৫৬টি রায় হয়েছে তার বেশিরভাগ মামলায়ই স্টেট ডিফেন্স ছিল এবং এই ট্রাইব্যুনালের প্রথম যে রায়টা হয়েছে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ সাহেবের সেটিও স্টেট ডিফেন্স দ্বারা পরিচালিত একটি মামলা ছিল এবং আমাদের আইনে স্টেট ডিফেন্স দিয়ে যারা অনুপস্থিত আসামি আছেন তাদের বিচারের ব্যবস্থা আছে।
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, আইনে পরিষ্কার করে বলা আছে যে, যদি আসামি পলাতক হয় তাহলে রায় দেওয়ার পর থেকে ৩০ দিনের মধ্যে উনি আপিল করতে পারবেন যদি উনি (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল) গ্রেফতার হন অথবা ট্রাইব্যুনালে এসে সারেন্ডার করেন। আদারওয়াইজ স্টেট ডিফেন্সের অ্যাপিলেট ডিভিশনে আপিল ফাইল করার কোনো এখতিয়ার নেই।
দলিলে এসব শব্দ দেখলে সতর্ক হোন, আপনিও পড়তে পারেন আইনি জটিলতা
এরপর প্রসিকিউটরের কাছে জানতে চাওয়া হয়, শেখ হাসিনা তো ভারতে আছেন। তো সেক্ষেত্রে আপনার ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। এটার কোনো অগ্রগতি আমরা কখনোই দেখিনি এবং ইন্টারপোলও কোনোরকম সাড়া দেয়নি। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তার বিষয়গুলো আসলে সার্বিক কী অবস্থায় আছে? এর উত্তরে হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়ে প্রসিকিউটর বলেন, যখন ট্রাইব্যুনাল প্রথম ওনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেন তখন আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির একটা আবেদন করেছিলাম। কালকে যদি রায় হয় এবং রায়ে যদি ট্রাইব্যুনাল ওনার বিরুদ্ধে শাস্তির রায় দেন তাহলে আমরা আরেকটি কনভিকশন ওয়ারেন্টের আবেদন ইন্টারপোলে আবার পাঠাবো তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



