সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে সিগারেটের ভিতরে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ওসমান গনি নামের এক মুদি-দোকানি ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে পুলিশের র্সোসের বিরুদ্ধে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের ভাটবাউর বাজারে মুদি-দোকানি ওসমান গনির সাথে এই ঘটনা ঘটে। তবে এলাকাবাসির প্রতিবাদ আর থানা ঘেরাওয়ের পর রাত ১০টার দিকে ব্যবসায়ী ওসমান গনিনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।
ভুক্তভোগী ওসমান গনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের ভাটবাউর এলাকার মৃত জসিম উদ্দিন।
অভিযুক্ত পুলিশের র্সোস সাদিকুল ইসলাম রাব্বি একই এলাকার মৃত নেন্দু মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী ওসমান গনি জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে দোকানে আসে এবং ৫ টাকা দামের একটি সিগারেট কিনে চলে যায় স্থানীয় বখাটে ও পুলিশের র্সোস সাদিকুল ইসলাম রাব্বি। কিন্তু সিগারেট কিনে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর সিগারেট ড্যাম বলে সিগারেট পাল্টিয়ে নিয়ে যায় রাব্বি। এরপর দোকান বন্ধ করে ইফতার শেষে দোকান খোলার পর সাব-ইন্সক্টের মাসুদুর রহমানসহ তিন পুলিশ দোকানের সামনে আসেন এবং দোকানের ভিতরে মাদকের কথা বলে দোকান তল্লাসী করেন। র্দীঘসময় খোজাখুজির পর রাব্বির ফিরিয়ে দেওয়া সিগারেটের ভিতর থেকে দুই পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিশ।
ওসমান গনি আরও জানান,পুলিশের র্সোস হওয়ায় নানাভাবে এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি ও হয়রানী করে আসছে সাদিকুল ইসলাম রাব্বি। এর আগেও মানুষকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে রাব্বি। বখাটে ও পুলিশের র্সোস সাদিকুর ইসলাম রাব্বি এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। রাব্বির নামে এখনো ৩টি মাদক মামলা চলমান আছে। আমাকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশের সাথে মিলে টাকার খাওয়ার ধান্দা করছিল রাব্বি। পুলিশ আর রাব্বি মিলে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আর এলাকার মানুষের কারনে বেচেঁ গেছি। তা না হলে আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে টাকা খাইতো।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ওসমান গণি দোকানে বসে মাদক বিক্রি করছেন বলে সাদিকুল ইসলাম রাব্বির মাধ্যমে খবর পাই। পরে ওসমানের দোকানে তল্লাশি চালিয়ে সিগারেটের ভেতর থেকে দুই পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওসমানকে আটক করে থানায় আনা হলেও রাতে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
মাসুদুর রহমান আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় যিনি (সাদিকুল ইসলাম রাব্বি) পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ধরে আনা হয়েছিল। রাব্বি জানিয়েছেন, আরিফ নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ইয়াবার প্যাকেট ওসমান গণির কাছে দিতে দেখে তিনি পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। আরিফকে থানায় এনে দেওয়ার শর্তে রাব্বিকে প্রাথমিকভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে আরিফকে থানায় আনতে না পারলে রাব্বির বিরুদ্ধে মামলা হবে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের লিটন জানান, ওসমান গনির অত্যান্ত একজন ভালো মানুষ। ওসমান কখনও বিড়ি-সিগারেটও খায় নাই। এলাকায় ওসমানের মতো ভালো মানুষ খুবই কম আছে। ওসমানকে অবৈধভাবে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশকে আর সর্তকতার সাথে কাজ করা উচিত ছিল। কারন পুলিশের র্সোস সাদিকুল ইসলাম রাব্বি নিজেই একজন মাদক ব্যবসায়ী। রাব্বির নামে মামলাও আছে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিল হোসেন জানান,মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে মুদি দোকানী ওসমান গনিকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে প্রাথমিক অবস্থায় সাদিকুল ইসলাম রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং সে কিভাবে বা কে তাকে মাদকের তথ্য দিয়েছে। সে বিষয়ে রাব্বিকে বিস্তারিত জানাতে দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।