জুমবাংলা ডেস্ক : অবসরে যাওয়া সব সদস্যের জন্য রেশন-সুবিধা চেয়েছে পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা। বর্তমানে শুধু ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে অবসরে যাওয়া সদস্যরা রেশন পান। কিন্তু এর আগে অবসরে যাওয়া প্রায় দুই লাখ পুলিশ সদস্য রেশন পান না। রেশন-সুবিধা না পেয়ে, বিশেষ করে কনস্টেবল থেকে এসআই পদমর্যাদার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি ও অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন নামে অবসরকালীন পুলিশ সদস্যদের দুইটি সংগঠন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়টিও আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। আমরা সেটারও ব্যবস্থা করে দেব।’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরও তার নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি। পরের বছর ২০২০ সালে পুলিশ সপ্তাহ চলাকালে বিষয়টি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা বাস্তবায়নের জন্য কঠোরভাবে আদেশ প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ঘোষণার পর অর্থ মন্ত্রণালয় তড়িঘড়ি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে সম্ভাব্য খরচের পরিমাণ জানতে চেয়ে চিঠি দেয়। পুলিশ সদর দপ্তর দেশের সকল পুলিশ সুপারের মাধ্যমে সম্ভাব্য খরচ-সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান চালায়। পুলিশ সদর দপ্তর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবসরকালীন পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা ও খরচের হিসাব পাঠায়।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের রেশন প্রদানের নির্দেশ দেয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন দেখে সারা দেশের কর্তব্যরত ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা হতাশ হয়ে পড়েন।
জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় যে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে যেসব পুলিশ সদস্য অবসরে গিয়েছেন, তাদের প্রত্যেক পরিবারের দুই জন সদস্য রেশন সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে দুই জনের জন্য ২০ কেজি চাল, ২০ কেজি আটা, দুই কেজি চিনি, সাড়ে চার লিটার তেল ও দুই কেজি ডাল বরাদ্দ পাবেন। এই আদেশ কার্যকর হওয়ার পর আরেক আদেশে চিনির পরিমাণ দুই কেজির পরিবর্তে এক কেজি ও দুই কেজি ডালের পরিবর্তে এক কেজি ডাল পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।
পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা প্রায় এক লাখ। এদের মধ্যে ৯০ হাজার সদস্যই হলেন কনস্টেবল থেকে এসআই পদমর্যাদার সদস্য। অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের মধ্যে এই ক্যাটাগরির সদস্যরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বিষয়টি খুবই অমানবিক ও দুঃখজনক জানিয়ে অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. আনিছুর রহমান হাওলাদার বলেন, আমরা পারিবারিকভাবে অত্যন্ত মানবেতন জীবন যাপন করছি। শতভাগ পুলিশ সদস্যদের অবসরকালীন রেশন-সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।