পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমের একটি বিতর্কিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এক শিশুর বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে তিনি কুরুচিপূর্ণ, অপমানজনক, কটূক্তিমূলক ও হুমকিসূচক ভাষায় কথা বলছেন।
ভিডিওতে চিকিৎসকের মুখে শোনা যায়, এই ব্যাটা থানা যায় পরে রহিবো। বুঝিন নাই। কাগজ খান নিয়ে থানা যায় পরে রহিস। কি বালটা করবি করিস। হাসপাতালটা তোমরা চিড়িয়াখানা পাইছো।
চিড়িয়াখানার মতো ভর্তি হবা। বেলেট কিনে নিয়ে যায় বাল কামাবা। মান-সম্মান তোমাদের কিছু নাই রে। একবারে নাক ফাটায় দিবো। থতমা উড়াই দেবো। নিজে মারামারি করার চিকিৎসাও করো। মুই মাইরা দিবা পারো। একদম থতমা উল্টায় দিম।
এই ভিডিও প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে। শত শত মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। অনেকে বলেন, এ ধরনের অমানবিক আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। শাহজাহান সোহেল নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
রফিকুল ইসলাম মন্তব্য করেন, ইনি তো ডাক্তার নামে পঞ্চগড় জেলার একটা বেয়াদব মানুষ। আমার সাথেও খারাপ ব্যবহার করেছে। আমার মা হাসপাতালে সারারাত ভর্তি ছিল, কিন্তু সকালে রোগী দেখার সময় তিনি আমার মাকে চিকিৎসা দেননি।
আমি বলতেই উনি চড়াও হয়ে বলেন, ‘আপনার মা তো পালাতক রুগি, রাতে নাকি পালিয়েছে’। এরপর তিনি নোংরা ভাষায় কথা বলেন ও মাস্তানির মতো আচরণ করেন।
ডা. মোজাম্মেল হক নাহিদ লিখেছেন, মেডিকেল সাইন্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ‘কাউন্সেলিং’। রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে ৭০-৭৫ শতাংশ রোগী ম্যানেজ করা সম্ভব। একজন বিসিএস সিনিয়র চিকিৎসক হয়ে এমন ভাষায় কথা বলা অনুচিত। এরকম কিছু ডাক্তারের জন্য গোটা চিকিৎসক সমাজকে অপমান সহ্য করতে হয়। সংশোধন হোন, সম্মান এমনি আসবে।
রাজাবুল ইসলাম রাজা মন্তব্য করেন, এই ডাক্তারের ভাষা খুবই অশালীন। আমি একজন উপসহকারী কৃষি অফিসার পরিচয় দেওয়ার পরও উনি খারাপ ব্যবহার করেছেন। একজন ডাক্তারের মুখে এমন ভাষা মানায় না।
খলিলুর রহমান প্রধান লিখেছেন, এমন মানুষের কাছ থেকে এই ব্যবহার আশা করা যায় না। মনে হচ্ছে ছোট জাতের মানুষ। ভাষা শুনলেই বোঝা যায়। সেলিনা আমিন কাজল লেখেন, ওই ডাক্তারের বাচ্চা, তোর চেয়ে গ্রামের চাষারাও ভালো।
আজহারুল ইসলাম জুয়েল মন্তব্য করেন, একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব হলো রোগীর সেবা করা। কিন্তু তার ভাষা, আচরণ ও জ্ঞান কোনোভাবেই সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। চিকিৎসকের জন্য ধৈর্য সবচেয়ে বড় গুণ। শিক্ষক যেমন কিছু গুণ ধারণ করেন, তেমনি একজন ডাক্তারকেও রোগীর প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখাতে হয়।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও ডা. আবুল কাশেমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ভিডিওটি দেখার পরপরই ওই চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।