জুমবাংলা ডেস্ক : বর্তমানে ভারত ও মিয়ানমার এ দুই দেশ থেকে পেঁয়াজ বেশি আমদানি হচ্ছে। পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে পাকিস্তান, চীন ও তুরস্ক থেকেও আমদানি হচ্ছে। আর আলু আমদানি হচ্ছে শুধু ভারত থেকে। এক্ষেত্রে আলু আমদানিতে জার্মান, মিশর, চীন ও স্পেনের কথা বলা হয়েছে বিটিটিসির প্রতিবেদনে।
আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ভারত থেকে অনেক পণ্যের আমদানি বিঘ্নিত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। এ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ও দীর্ঘদিনের এই নির্ভরতা কাটাতে নিত্যপণ্য আমদানিতে বিকল্প দেশের সন্ধান করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
গত বছরের নভেম্বরে ১০০ টাকায় যে খাদ্য কেনা গেছে, চলতি বছরের নভেম্বরে একই পরিমাণ খাদ্যপণ্য কিনতে প্রয়োজন হচ্ছে ১১৩ টাকা ৮০ পয়সা। এটি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কাজ করছে না।
একক উৎস ও একক দেশের ওপর নির্ভরতা কাটাতে বিকল্প দেশ খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনও (বিটিটিসি)। ইতোমধ্যে বিটিটিসি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। সেখানে ভারতের পাশাপাশি আরও কিছু দেশ চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আলু-পেঁয়াজের দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে বিকল্প উৎসের সন্ধান দিয়েছে বিটিটিসি। বিটিটিসির এ প্রস্তাবনার ধারাবাহিতকায় বিকল্প দেশ থেকে এসব পণ্য আমদানিতে আমদানিকারকদের মনোযোগী হওয়ার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, বর্তমানে ভারত ও মিয়ানমার এ দুই দেশ থেকে পেঁয়াজ বেশি আমদানি হচ্ছে। পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে পাকিস্তান, চীন ও তুরস্ক থেকেও আমদানি হচ্ছে। আর আলু আমদানি হচ্ছে শুধু ভারত থেকে। এক্ষেত্রে আলু আমদানিতে জার্মান, মিশর, চীন ও স্পেনের কথা বলা হয়েছে বিটিটিসির প্রতিবেদনে। আর চীন, পাকিস্তান ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির কথা বলা হয়েছে।
বিটিটিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরে বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৯ লাখ টন। তবে ৩০ শতাংশ সংরক্ষণকালীন ক্ষতি ও বীজ বাদে সরবরাহ হয়েছে ২৭ লাখ টনের কিছু বেশি। যদিও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, উৎপাদন ও চাহিদার হিসাব ঠিক নেই। এ কারণে দেশে ভালো উৎপাদনের পরও চাহিদার অন্তত ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিশর, চীন ও মিয়ানমার থেকে সাড়ে ৯ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
আলুর বিষয়ে বলা হয়েছে, দেশে বছরে আলুর চাহিদা ৮৫ থেকে ৯০ লাখ টন। স্থানীয় উৎপাদন ১০৬ লাখ টন। ২৫ শতাংশ সংরক্ষণকালীন ক্ষতি ও বীজ বাদে সরবরাহ সাড়ে ৭৯ লাখ টন। ভারত থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলু আমদানি হয়েছে দেড় লাখ টন।
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সহযোগিতায় খেজুর, চিনি, সয়াবিন তেল, ডিমসহ আরও কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমানো হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে, এটা মেনে নিয়েই শুধু পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা আনতে এসব শুল্ক কমানো হয়েছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চাহিদা-জোগানের ভারসাম্য রক্ষায় বাংলাদেশকে উদার ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় বাজারে যে সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়, এখন দেশের ক্ষেত্রে (পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে) সিন্ডিকেট হলেও সমস্যা। অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক নয়। বাংলাদেশের জন্য ভারত, পাকিস্তান বা চীন কোনো ইস্যু নয়; বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবাইকে আমরা সংযুক্ত করতে চাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।