বিনোদন ডেস্ক : মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার ইতিহাসে ৭২ জন সুন্দরী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে আঙুলে গোনা কয়েকজনের নামই পাঠকের মনে থাকতে পারে। ভারতের পাঁচ সুন্দরীর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম ঐশ্বরিয়া রাই। কম যাননি প্রিয়াংকা চোপড়াও। ভারতের অন্য তিন সুন্দরী রিটা ফারিয়া, ডায়ানা হেইডেন আর যুক্তামুখির নাম আলোচিত ছিল কিছুদিন। এরপর হাওয়া; কিন্তু অনন্য মিস ওয়ার্ল্ড হয়ে ওঠেন ঐশ্বরিয়া।
১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট পরার পর থেকেই ভারতের ঘরে ঘরে পরিচিতি পান ঐশ্বরিয়া। নিজেকে প্রমাণ করেন বলিউড চলচ্চিত্রের একজন অপরিহার্য অভিনেত্রী হিসাবে। উপহার দেন গুরু, যোধা আকবর, এনথিরানের মতো আইকনিক ছবিগুলো। বহু বিজ্ঞাপনের আকর্ষণীয় মডেল হয়ে সৌন্দর্যের প্রমাণ দিয়েছেন ২১ বছর বয়সে মিস ওয়ার্ল্ড নির্বাচিত হওয়া অ্যাশ। অভিনয় করেছেন ৪০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে। বছরের পর বছর ধরে তিনি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্ল্যাটফর্মে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের।
ঐশ্বরিয়ার জন্ম ১৯৭৩ সালের ১ নভেম্বর ভারতের কর্নাটকের ব্যাঙ্গালুরুতে। জন্মগতভাবেই বনেদি পরিবারের এ সুন্দরী নবম শ্রেণিতে পড়াকালীনই মডেল হয়েছিলেন বিজ্ঞাপনে। মিস ওয়ার্ল্ড নির্বাচিত হওয়ার আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন মডেল আইকন হিসাবে। বিশেষ করে ১৯৯৩ সালে আমির খানের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ করা পেপসির বিজ্ঞাপনটি নতুন পালক জুড়ে দিয়েছিল অ্যাশের ক্যারিয়ারে।
ঐশ্বরিয়ার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু ১৯৯৭ সালে পরিচালক মণিরত্নমের তামিল ছবি ‘ইরুভার’-এর মধ্য দিয়ে। বলিউডে তার প্রথম ছবি ‘আওর পেয়ার হো গায়া’। তবে ব্যাপক পরিচিতি আসে সঞ্জয়লীলা বানসালির ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ দিয়ে। এরপর বড় সাফল্য আসে বানসালির ‘দেবদাস’ ছবির মধ্য দিয়ে। এ ছবিতে পার্বতী রূপে ছিলেন অনবদ্য।
ভার্সেটাইল অভিনেত্রী হিসাবে নিজেকে তিনি প্রমাণ করলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত বাংলা ছবি ‘চোখের বালি’র বিনোদিনী হয়ে। এরপর প্রতিভার দ্যুতি ছড়িয়েছেন ‘রেইনকোট’, ‘জোশ’, ‘কুছ না কাহো’, ‘খাকি’ চলচ্চিত্রেও। ২০০৬ সালে জনপ্রিয় সিরিজ ধুম-এ এসে ভক্তদের তাক লাগিয়ে দেন অ্যাশ।
প্রতিভার মূল্যায়ন পেয়েছেন একাধিকবার। ১৯৯৯ এবং ২০০২ সালে ‘হাম দিল দে চুকে সানাম’ এবং ‘দেবদাস’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে ‘সেরা অভিনেত্রী’র পুরস্কার। ‘মোহাব্বতে’ সিনেমার জন্য হয়েছেন সেরা ‘সহ-অভিনেত্রী’। ২০০৯ সালে তার অসামান্য অভিনয় দক্ষতার কারণে তিনি ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মশ্রী সম্মাননা অর্জন করেন।
ঐশ্বরিয়া রাই প্রথম ভারতীয় হিসাবে ২০০৩ সালে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জুরিতে ছিলেন। শ্বশুর অমিতাভ বচ্চনের পর তিনি ছিলেন মাদাম তুসোতে স্থান পাওয়া দ্বিতীয় ভারতীয়।
বিগ বি’র ছেলে অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির ভাগ্নেদের কাছে নতুন নাম পেয়েছিলেন গুল্ল মামি। শরীর ঠিক রাখার ক্ষেত্রে কোনো ডায়েটিংয়ে বিশ্বাসী নন, খাবারের প্রতি দুর্বল অ্যাশ। তবে প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারে এড়িয়ে চলেন। গুরু চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময়ই অভিষেকের প্রেমে পড়েন ঐশ্বরিয়া।
আর তা প্রকাশ করেন ২০০৭ সালে, অপরাহ উইনফ্রের একটি শোতে। নিউইয়র্কে একটি সিনেমার শুটিংয়ের সময় তারা পরস্পর আংটি বদল করেছিলেন। ২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল ঐশ্বরিয়া বিয়ে করেন বলিউড অভিনেতা অভিষেক বচ্চনকে। বিয়ের পর ঐশ্বরিয়ার নামের সঙ্গে বচ্চন যুক্ত হয়। ২০১১ সালে অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার ঘর আলো করে আসে একমাত্র কন্যাসন্তান আরাধ্য। বর্তমানে স্বামী-সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছেন অ্যাশ।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.