ধর্ম ডেস্ক : কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে ৩টি শর্ত রয়েছে। পশুকে এই ত্রুটি থেকে মুক্ত রাখা জরুরি। কোরবানি আল্লাহ তায়ালার দরবারে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ। অন্য ইবাদতের মতো কোরবানিও শুধু মাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য আদায় করা উচিত। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
বলে দাও, নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি ও আমার জীবন-মরণ সবই আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। তার কোনও শরীক নেই। আমাকে এরই হুকুম দেওয়া হয়েছে এবং আনুগত্য স্বীকারকারীদের মধ্যে আমিই প্রথম। (সূরা আনআম, আয়াত : ১৬২-১৬৩)
কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রয়েছে তাহলো—
১. চতুষ্পদ জন্তু হওয়া। যেমন- উট, গরু ও ছাগল। আল্লাহ বলেন— প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কোরবানির বিধান রেখেছিলাম, যাতে তারা জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে এজন্য যে, তিনি চতুষ্পদ গবাদিপশু থেকে তাদের জন্য রিজিক নির্ধারণ করেছেন। আর তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। অতএব তার নিকট তোমরা আত্মসমর্পণ কর এবং তুমি বিনয়ীদের সুসংবাদ দাও। (সূরা হজ, আয়াত : ৩৪)।
ইমাম শাফেঈ (রহ.) বলেন, উপরে বর্ণিত পশুগুলো ছাড়া অন্য কোন পশু দিয়ে কোরবানি সহি হবে না।
২. শরীয়ত নির্ধারিত বয়সে উপনীত হওয়া। কোরবানি বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য পশুর বয়স পূর্ণ হওয়া জরুরি। মহানবী (সা.) বলেন,তোমরা দুধের দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত ওঠা (মুসিন্নাহ) পশু ছাড়া করো না। তবে কষ্টকর হলে এক বছর পূর্ণকারী ভেড়া (দুম্বা বা ছাগল) কোরবানি করতে পারে। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৩)
‘মুসিন্নাহ’ পশু ষষ্ঠ বছরে পদার্পণকারী উট এবং তৃতীয় বছরে পদার্পণকারী গরু বা ছাগল-ভেড়া-দুম্বাকে বলা হয়। কারণ, এই বয়সে সাধারণত এই সব পশুর দুধের দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত উঠে।
৩. কোরবানির পশু ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। কোরবানির পশু এমন দোষ-ত্রুটি মুক্ত হতে হবে, যেগুলোর কারণে কোরবানি আদায় হয় না।
কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে যেসব জিনিস ত্রুটি হিসেবে গণ্য হবে তাহলো—
১. স্পষ্ট অন্ধ : যেমন চোখ একেবারে কোটরের ভেতরে ঢুকে যাওয়া কিংবা বোতামের মত বের হয়ে থাকা কিংবা এমন সাদা হয়ে যাওয়া যে, সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়, চোখ অন্ধ।
২. সুস্পষ্ট রুগ্ন : যে রোগের প্রতিক্রিয়া পশুর উপরে সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে। যেমন এমন জ্বর হওয়া যার ফলে পশু চরতে বের হয় না ও খাবার খায় না। এমন চর্মরোগ যা পশুর গোশত নষ্ট করে দেয় কিংবা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
৩. স্পষ্ট খোঁড়া : যার ফলে পশুর স্বাভাবিক হাঁটা-চলা ব্যাহত হয়।
৪. জীর্ণ-শীর্ণ : যা অস্থির মজ্জা নিঃশেষ করে দেয়। নবী করীম (সা.)-কে কোরবানির ক্ষেত্রে কোন ধরনের পশু পরিহার করতে হবে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বলেন—
চার ধরনের ত্রুটিযুক্ত পশু কোরবানি করা জায়েয নয়। অন্ধ যার অন্ধত্ব সুস্পষ্ট, রুগ্ন- যার রোগ সুস্পষ্ট, খোঁড়া- যার পঙ্গুত্ব সুস্পষ্ট, বৃদ্ধ ও দুর্বল-যার হাড়ের মজ্জা শুকিয়ে গেছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৮০২; তিরমিজি, হাদিস : ১৪৯৭)
এ চারটি ত্রুটি থাকলে সে পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ হবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।