জুমবাংলা ডেস্ক : ‘স্মৃতিময় জীবনে আপনি কি একা? কোনো চিন্তা নেই। শতভাগ নিরাপদে এসি-নন এসি রুম। আপনি যদি মেয়ে নিয়ে আসেন, তাহলে রেট কম। আর আমাদের থেকে নিতে চাইলে রেট কিছুটা বেশি। মেয়ে ভেদে ভাড়া কমবেশি হতে পারে। আর হ্যাঁ, আসার আগে অবশ্যই ফোন দিয়ে আসবেন।’
এমনসব তথ্যসংবলিত রং-বেরঙের ভিজিটিং কার্ড চোখে পড়ে রাজধানীর পথেঘাটে। এমন কার্ড ইদানীং বেশি পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে মিরপুরের ফুটপাত-ফুটওভারব্রিজ, রাস্তা, কিংবা অলিতে-গলিতে। প্রতিটি কার্ডেই বড় করে লেখা মোবাইল নম্বরের পাশাপাশি থাকে একজন ভাইয়ের নাম। শাওন ভাই, সুমন ভাই, সাজু ভাই, সোহাগ ভাই- ভাইয়ের যেন কোনো শেষ নেই। তবে কারা এই ভাইয়েরা? কী তাদের কাজ, কেনই বা এমন অফার?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আগ্রহী হন জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক আবু সালেহ মুসা।
এরপর পরিচয় গোপন করে একটি নাম্বারে তিনি ফোন দিলে প্রথমেই ভেসে আসে একজন নারীর কণ্ঠ। পরে তাদের সার্ভিস সম্পর্কে জানতে চাইলে ধরিয়ে দেন একজন পুরুষকে।
তিনি আমাদের বলেন, শেওড়াপারায় চলে আসেন। শতভাগ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া যদি ইনজয় করতে চান? ইনজয় করার মতো মেয়ে আছে। যত ধরনের ফ্যাসিলিটি আছে দিব। ঘণ্টা ১৫০০, ২০০০, ২৫০০ টাকা এবং নাইট আছে ৪০০০-৫০০০ টাকা।
পরে তাদের দেওয়া অস্থায়ী স্থান শেওড়াপারায় যাই আমরা। তবে সেখানে যাওয়ার পরপরই ঘুরে যায় গল্পের মোড়। হয়ত কোনোভাবে সন্দেহ হয় তাদের। ফলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফোন দিলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আমরা ফোন দেই অন্য আরেকটি কার্ডের নম্বরে।
সেখানে ফোনটি রিসিভ করেন সাজু ভাই নামে একজন। যেতে বলেন মিরপুর-১০ শাহ আলী মার্কেটের সামনে। সেখানে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং একই কথাই বুঝিয়ে বলেন, শতভাগ নিরাপত্তাসহ উপভোগের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে।
এদিকে পড়ে থাকা এ ধরনের ভিজিটিং কার্ডের কারণে বিরক্ত স্থানীয় বাসিন্দা, দোকানদার ও পথচারীরা। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে। তারা বলছেন, দেহ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চক্রটি সাধারণ মানুষকে ভয়ানক ফাঁদের জালে আটকাতে পাড়া-মহল্লা-অলি-গলিসহ রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখছে ভিজিটিং কার্ড।
এ বিষয়ে আইনগত কোনো সুরাহা আছে কি না, তা জানতে যোগাযোগ করা হয় মিরপুর এরিয়ার কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে। তবে তারা কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহ দেখাননি।
রাতের আঁধারে কিংবা নিরিবিলি সময়ে স্থান বুঝে রঙ-বেরঙের এই ভিজিটিং কার্ড এমনভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, যাতে সহজেই পথচারীদের নজরে পড়ে। না বুঝে এই পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।