জুমবাংলা ডেস্ক : কুমিল্লার তিতাসে প্রেমিকার ছোট বোনকে অপহরণ করে প্রেমের স্বীকৃতি আদায় করেছেন রকিবুল ইসলাম আপন (২২) এবং মাশরাফি আক্তার মুন্নী (১৮) নামের প্রেমিক যুগল। উপজেলার কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কেশবপুর গ্রামের মো. মাঈন উদ্দিনের মেয়ে মাশরাফি আক্তার মুন্নীর সঙ্গে খালাতো ভাই আপন হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিক আপন একই এলাকার আনিসুর রহমানের ছেলে।
তাদের প্রেমের সম্পর্ক উভয় পরিবার মেনে নেয়নি। পরে প্রেমিক যুগল কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করেন। বিয়ের পর আপনের পরিবার মেনে নিলেও বেকার হওয়ায় সে বিয়ে মেনে নেয়নি মুন্নীর পরিবার।
পরে মুন্নীর পরিবারের স্বীকৃতি আদায়ে ছোট বোন মুনিরাকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার ফন্দি আঁটেন প্রেমিক যুগল। পরিকল্পনা ছিল মুক্তিপণের টাকা দিয়ে ইউরোপ চলে যাবেন তারা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ১ আগস্ট আপন তার বন্ধু ভাসানীর সহযোগিতায় মুন্নীর ছোট বোন মুনিরাকে প্রাইভেটে যাওয়ার পথ থেকে অপহরণ করে কুমিল্লার দাউদকান্দির একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। পরে মুন্নী-মুনিরার চাচা নাসির উদ্দিনের মোবাইলে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
পর দিন ২ আগস্ট মুন্নী-মুনিরার বাবা মাঈন উদ্দিন তিতাস থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের ৬ দিন পর গত রোববার ২৪ লাখ টাকা দিতে রাজি হওয়ার ভান করা হয়। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় অপহৃত মুনিরার কাছে পৌঁছায় পুলিশ।
দাউদকান্দির ওই বাসা থেকে অপহৃত মুনিরাকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী আপন এবং তার বন্ধু মো. ভাসানীকে আটক করা হয়। মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পরে উভয় পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হয় ভিকটিম এবং অভিযুক্তকে।
এর একদিন পর মঙ্গলবার উভয় পরিবার বসে সিদ্ধান্ত নেয় মুন্নী এবং আপনের সম্পর্ক মেনে নেওয়ার। আগামী শুক্রবার পারিবারিকভাবে তাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় প্রেমিকা মুন্নীর বাবা মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, আপন-মুন্নী খালাতো ভাইবোন। আর সে বেকার। তারা যখন তাদের মধ্যকার সম্পর্কের কথা জানায় আমি বলেছিলাম ছেলে যদি কর্ম করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তা হলে আমার মেয়েকে বিয়ে দেব। কিন্তু তারা সেটি না শুনে আমার ছোট মেয়েকে অপহরণের নাটক সাজায়। তাদের পাগলামি দেখে আমি এবং আমার ভায়রা (আপনের বাবা আনিস) সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের নতুন করে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেব। তারা সুখে থাকলেই আমাদের সুখ।
তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, অপহরণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এবং মুনিরা উদ্ধার হওয়ার পর তারা উভয় পরিবার আপস-মীমাংসা করেছে। পুলিশের কাজ ছিল তাদের উদ্ধার করা। আমরা ভিকটিমকে উদ্ধার করেছি। মেয়ের পরিবার মামলা না করায় উভয়কে উভয় পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিটা তাদের পারিবারিক বিষয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।