জুমবাংলা ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত স্বচ্ছ। জনগণ কোন রাজনৈতিক দলকে গ্রহণ করবে কিংবা বর্জন করবে নির্বাচনের মাধ্যমে সেই রায় দেবে। তবে যারা জনগণের আদালতের রায়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায় কিংবা যাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে তারাই নির্বাচন নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি আহ্বান, আপনারা ধৈর্য হারাবেন না, নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকুন। নির্বাচন কমিশন তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথারীতি পালন করবে সেই বিশ্বাস রাখুন।
বুধবার সন্ধ্যায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
দলের নেতা-কর্মৗদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না বরং সর্তক থাকবেন। নিজেরা এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবেন না যাতে কেউ অপপ্রচারের সুযোগ পায়। নিজেদেরকে জনগণের আস্থায় রাখুন, আস্থায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।
তিনি বলেন, আমাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে, কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যাতে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা বিনষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। এ ব্যাপারে ছাত্র দলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে সর্তক ও সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখা দরকার লোভ বা লাভের ঊর্ধ্বে গিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ করে ছাত্র-তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম।
সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, কোনো কোনো মহল থেকে সংস্কার নাকি নির্বাচন নিয়ে তর্ক সৃষ্টি করেছে। এই ধরনের জিজ্ঞাসাকে বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক সকল মানুষ, সকল রাজনৈতিক দল এটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কূট তর্ক বলেই বিবেচনা করে। বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের গুনগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে সংস্কার একটি অনিবার্য ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একইভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টেকসই এবং প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে নির্বাচনই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পন্থা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি মনে করে রাষ্ট্রে জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা না গেলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার কিংবা পুঁথিগত সংস্কার শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই টেকসই হয় না।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সংস্কার বা গৃহীত পরিকল্পনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিলে ষড়যন্ত্রকারীরা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বিনষ্ট করার সুযোগ নেবে। এরই মধ্যে তারা একাধিকবার দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দেশে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি দেখতে চায় না। এই কারণে জনগনের পক্ষের রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এই সরকারের প্রতি অব্যাহত রেখেছে।
তারেক রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার প্রচলিত বিধি ব্যবস্থা সংস্কার করে আরও উন্নত বিধি ব্যবস্থার পক্ষে ছাত্র-তরুণরা অবস্থান নেবে, সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে দেশের তরুণ জনশক্তি ভুমিকা রাখবে এটাই স্বাভাবিক। এটাই তারুণ্যে ধর্ম। দেশে প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটবে এটাই গণতান্ত্রিক রীতি। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে বিএনপি সকল গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সকল পরিস্থিতিতে সকল সময়ে বহু দল ও মতের চর্চার পক্ষে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্র দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা জ্ঞান ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে প্রধান হাতিয়ার। রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাদের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য হতে হবে লেখাপড়া, লেখাপড়া এবং লেখাপড়া।’
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ছাত্র দলের সাবেক নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রাকিবুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, রাশেদ ইকবাল খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্য্যালয় ছাত্র দলের গণেশ চন্দ্র রায় সাহস প্রমুখ।
এর আগে সকালে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্দা জানান। সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এই দেশ নতুন প্রজন্মের দেশ। আমরা নতুন প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা এদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গ্রহণ করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।