আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এখন পর্যন্ত সংঘাত চলছেই। এদিকে ইউক্রেনকে কতটা সামরিক সহায়তা দেওয়া যায় এবং রাশিয়ার ওপর কতটা নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত এসব প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে এখনও মতপার্থক্য রয়েছে। এই দ্বিধা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এমনকি, গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে ন্যাটো জোটের বৈঠকে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, কে আমাদের বন্ধু, কে আমাদের সাহায্য করছে এবং কারা করছে না, আজ তার প্রমাণ হবে।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর কাছ থেকে ইউক্রেন কতটা সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে এ নিয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি খোলাখুলি ভাবেই তার মতামত দিয়েছেন।
ফ্রান্স: দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিষয়ে ক্রোধ এবং অসন্তোষ চেপে রাখেননি ইউক্রেনের এই নেতা।ফ্রান্স কেনো ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দিচ্ছেনা তা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ জেলেনস্কি। তিনি বলেন, তারা (ফ্রান্স) রাশিয়াকে ভয় পায়। এটাই সত্যি। যারা প্রথমে বড় বড় কথা বলে তারাই প্রথমে ভয় পায়।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ একমাত্র ইউরোপীয় নেতা যিনি ইউক্রেন সংকট শুরুর পর থেকে নিয়মিত প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
এমনকি প্রেসিডেন্ট পুতিন আর ক্ষমতায় থাকতে পারেন না বলে শনিবার পোল্যান্ডে এক বক্তৃতায় উল্লেখ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তার এই বক্তব্যের খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন ম্যাক্রাঁ। রোববার ফ্রান্সের এক রেডিওতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, এখন এ ধরণের ‘গরম গরম কথা’ ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা তৈরি করবে।
জার্মানি: জেলেনস্কি জার্মানি সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, বার্লিন এখনো প্রধানত ‘অর্থনীতির কাঁচ’ দিয়ে সমস্যা দেখছে। তারা (জার্মানি) একটি ভারসাম্য রেখে চলার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং তারা পরিস্থিতিকে অর্থনীতির কাঁচ দিয়ে দেখছে। তারা মাঝে-মধ্যে কিছু সাহায্য করছে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের অবস্থান অদল-বদল করছে।
জেলেনস্কি বলেন, জার্মানি দেখছে পরিস্থিতির প্রভাব তাদের ওপর কিভাবে পড়ে। দেশের ভেতর থেকে চাপ তৈরি হলে তারা আমাদের সাহায্য করবে। তারপর যখন তারা মনে করবে অনেক হয়েছে, তখন সাহায্য বন্ধ করে দেবে।
ব্রিটেন: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ব্রিটেন সম্পর্কে সবচেয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, ব্রিটেন ভারসাম্য নিয়ে ভাবছে না এবং অন্যান্যদের চেয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার দেশকে অস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী।
তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি জনসনই একজন নেতা যিনি সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছেন…ব্রিটেন সন্দেহাতীতভাবে আমাদের পক্ষে। তারা কোনো ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছে না। সমস্যা সমাধানে ব্রিটেন অন্য কোনো বিকল্প ভাবছে না।
জেলেনস্কি বলেন, ব্রিটেন চাইছে ইউক্রেন জিতুক এবং রাশিয়া হেরে যাক। কিন্তু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হোক এটা ব্রিটেন চায় কিনা আমি সে সম্পর্কে নিশ্চিত নই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।