দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার আইন যুগোপযোগী করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এজন্য এ সংক্রান্ত আইনে বড় পরিবর্তন আনছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। নতুন আইনে এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, উপাচার্য নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আইনের চূড়ান্ত পর্যায় প্রস্তুত হয়েছে, খুব দ্রুতই মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ের পাঠানোর পর যাচাই-বাছাই শেষে সেটির অনুমোদন হবে। তারপর আইনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে আসতে আমরা কাজ শুরু করব।
নতুন আইন অনুযায়ী, একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক আয়ের সর্বনিম্ন ২ শতাংশ অর্থ গবেষণা ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হবে। এছাড়া বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর স্কলারশিপ দিতে হবে। এই স্কলারশিপ বেশির ভাগ সময় অথরিটির পরিচিত অথবা প্রভাবশালী ব্যক্তির সন্তানরা পেয়ে থাকেন। এটি থেকে বের হয়ে আসতে নীতিমালা করা হচ্ছে। এই স্কলারশিপ যাতে কার্যকর হয় সেটির জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করা হচ্ছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা দিতে একটি মেডিকেল সেন্টার থাকতে হবে। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ইমারজেন্সি সময়ে যাতে সর্বোচ্চ ভালো সেবা পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল সেন্টার রয়েছে সেগুলো সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
’আইনের চূড়ান্ত পর্যায় প্রস্তুত হয়েছে, খুব দ্রুতই মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে সেটির অনুমোদন হবে। তারপর আইনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে আসতে আমরা কাজ শুরু করব। – বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। এটি বিভিন্ন লেয়ারে সমাধানের জন্য গঠিত কমিটিগুলোর নিয়মিত সভার আয়োজন করতে হবে। এসব কমিটির মধ্যে অন্যতম হলো বিভাগ, অনুষদ, সিন্ডিকেট বিওটির কমিটিগুলো সক্রিয় থাকতে হবে এবং সমস্যা সমাধানে কার্যকরী সভার আয়োজন করতে হবে।
দেশে বর্তমানে ৭ থেকে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ফিজিক্যালি ডিজেবল। তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াশরুম, লাইব্রেরি, ক্লাস রুমসহ সব ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
শুধু একটি বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হবে না। কারণ একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শ্রেণিকক্ষের মধ্যে আবদ্ধ নয়। তাই শিক্ষার্থীদের খেলাধুলাসহ আরও কিছু বিষয়ের জন্য গ্রিন স্পেস বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
একজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর তার পদোন্নতি কীভাবে হবে; লেকচারার থেকে সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার জন্য কত দিন সার্ভিস দিতে হবে; কতগুলো পাবলিকেশন এবং পিএইডি লাগবে, সে ব্যাপারে কাঠামোগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন সেন্টারের খুব একটা কার্যক্রম নেই। যদিও এটি উচ্চশিক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালের প্রধান কে হবেন এবং কীভাবে সেটির নীতিমালা হবে, এছাড়া নতুন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লেখা কীভাবে জার্নালে প্রকাশ হবে- সেটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া দেশের সবচেয়ে মেধাবী ও যোগ্য মানুষেরা অর্থাৎ ‘সূর্য সন্তান’ যাতে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান সেটির ব্যাপারেও কাজ করা হচ্ছে বলে জানান ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.