জুমবাংলা ডেস্ক : কক্সবাজার উপকূলে ঘুর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে প্রচণ্ড বেগে বাতাস শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। জোয়ারের পানির উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার শহর ও বিভিন্ন উপজেলায় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ও মৃদু বাতাস বইছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে বসবাসরত পর্যটন ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন শোভ জানান, রোববার সকাল ১০টার পর থেকে প্রচণ্ড বেগে দমকা হাওয়া বইয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসশনের কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত উপকূলের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ২ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল এবং আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আজ দুপুরের মধ্যে উপকূলের ৬৩৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে তিন লাখ মানুষ আশ্রয় নেবে।
ঘূণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একারণে কক্সবাজার উপকূলীয় অঞ্চলের বসবাসরত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে আনছে স্থানীয় প্রশাসন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ থেকে রক্ষা পেতে শনিবার দুপুর থেকে এ পর্যন্ত ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ৪৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ঘুর্ণিঝড় মোখা যেহেতু কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের পাশ ঘেঁষে যাবে সেজন্য সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দ্বীপের তিন হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন টেকনাফে চলে এসেছে। এ ছাড়া দ্বীপের ৩৭টি হোটেল রিসোর্টে সাড়ে চার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এই দ্বীপে ১০ হাজার মানুষের বসবাস করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, কক্সবাজারের ৬৬টি হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতি।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি মো: আবুল কাসেম জানিয়েছেন, কক্সবাজারে দুর্যোগপূর্ণ সময়ের কথা বিবেচনা করে আমরা ৬৬টি হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। এতে করে অন্তত অর্ধলাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিনের দুই দিক থেকে যেহেতু খোলা রয়েছে এবং পানি চলাচলের সুবিধা আছে, তাই বড় ধরনের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওই অঞ্চলে পানি জমে থাকবে না। আবহাওয়া অফিস থেকে প্রতি মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় মোখার সকল আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজার জেলায় সিসিপির ৮ হাজার ৬০০ জন এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজার ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। সেন্টমার্টিনে নেভি, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ ৩৭টি সরকারি স্থাপনা রয়েছে। তাই সেখানে সরকারি স্থাপনাগুলো সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য ২০ লাখ নগদ টাকা রাখা হয়েছে, যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ৫ দশমিক ৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩ দশমিক ৪ মেট্রিক টন শুকনা কেক, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন ও ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে।
জেলায় যে ৬৩৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেগুলোতে ৫ লাখ ৫ হাজার ৯৯০ জন মানুষ থাকতে পারবে।
খোলামেলা দৃশ্যে নেট দুনিয়া ঝড় তুললো এই ওয়েব সিরিজ, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না
শনিবার সকাল থেকে মেডিকেল দল, কোস্টগার্ড, নৌ-বাহিনী, পুলিশ, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক দল, স্কাউট দল, আনসার বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।