আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকাশ্যেই ভারতীয়েরা বৈষম্যের শিকার হন। সব জেনেও দেশটির সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয় না।
দেশটিতে কোনও বর্ণবৈষম্যবিরোধী আইন নেই। অবাধেই সেখানে চলে বৈষম্যের বহিঃপ্রকাশ। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল ছাড়াও বুসান, দায়েগু, ইঞ্চেওনের মতো বড় শহরের অভিজাত ক্লাব, রেস্তোরাঁ এবং হোটেলের বাইরে বড় বড় সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ভারত-বিরোধী সংলাপ, ‘ভারতীয়রা নিয়ম মানেন না। তাঁদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।’
শুধু হোটেল, রেস্তোরাঁ নয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাসী ভারতীয়দের অভিজ্ঞতাও খুব একটা ভাল নয়। তাঁদের কাছ থেকে জানা যায়, পথেঘাটে উঠতে-বসতে কতটা বৈষম্য এবং ঘৃণার শিকার হন ভারতীয়েরা।
দক্ষিণ কোরিয়ার শপিং মল, দোকান-বাজারেও ভারতীয়দের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় অনেক সময়েই। দেশটিতে টিকতে না পেরে অনেকেই ভারতে ফিরে এসেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বাহ্যিক সৌন্দর্যকে এতটাই প্রাধান্য দেওয়া হয় যে, কলেজ পাশ করার পর ছেলেমেয়েরা বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসাবে পান প্লাস্টিক সার্জারির খরচ। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিজেদের আরও ‘সুন্দর’ করে তোলেন তাঁরা।
দেশের বিভিন্ন সংস্থায় চাকরির ইন্টারভিউতেও সৌন্দর্যকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কে কত সুন্দর দেখতে, কার গায়ের রং কতটা উজ্জ্বল এবং ফর্সা, তার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়।
সৌন্দর্য এবং বর্ণের ভিত্তিতে বৈষম্য কোরিয়ার চাকরির বাজারে একসময় এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, নিয়োগ নিশ্চিত করার আগে কোনও কর্মচারীর মুখ না দেখার নিয়ম চালু হয়েছিল বেশ কিছু সংস্থায়।
ভারতীয়দের সম্পর্কে কোরিয়ার লোকজনের মধ্যে সাধারণ একটি বিদ্বেষ, ঘৃণার মনোভাব কাজ করে। ভারতীয় অর্থেই তাঁদের কাছে ‘নোংরা’, ‘বর্বর’ এবং ‘অস্পৃশ্য। যদিও এই ধরনের মানুষের ব্যতিক্রম আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যেই অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, অসরকারি সংগঠন বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়নের চেষ্টাও চলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় সংস্কৃতি, রীতি-রেওয়াজ সম্পর্কে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষদের কিছু বদ্ধমূল ভুল ধারণা রয়েছে। তা দূর করা দরকার। তার জন্য দুই দেশের মধ্যে আদানপ্রদান আরও বাড়িয়ে তুলতে হবে। তবেই ঘুচবে দূরত্ব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।