মাত্র ২ মাসের ব্যবধানে আবারও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। চলতি সপ্তাহেই দেশটিতে সফর করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের এ সফরের খবরটি সামনে আসতেই আরও জোরালো হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার দহরম-মহরম সম্পর্কের ব্যাপারটি। চলতি বছরের জুন মাসেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে দেশটিতে সফর করেছিলেন তিনি। ওই সফরে ট্রাম্পকে প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দেশে ফিরেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন আসিম মুনির। সেই খবর আবার ফলাও করে প্রচারও করেছিল পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো।
দ্য ডন বলছে, পাকিস্তান সেনাপ্রধানের এবারের সফরটি মূলত ফিরতি সফর। গত জুলাইয়ের শেষ দিকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)-এর প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলার পাকিস্তান সফরের পর ফিরতি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন তিনি।
সেন্টকম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জেনারেল কুরিলার সাম্প্রতিক দক্ষিণ এশিয়া সফরে পাকিস্তানও অন্তর্ভুক্ত ছিল। আর সেই সফরে কুরিলাকে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ (সামরিক)’ খেতাবে ভূষিত করে পাকিস্তান সরকার।
এর আগে, গত জুন মাসে ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির ওয়াশিংটনে যান। সেসময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে তাকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান, যা সাধারণত রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানদের করা হয়ে থাকে।
যদিও এবার সফর নিয়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী (আইএসপিআর) বা যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাস আনুষ্ঠানিক কিছু জানায়নি, তবে এর আগের সফরেই আসিম মুনির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তিনি বছর শেষে আবারও যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন।
দ্য ডন বলছে, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের এই সফর এমন এক সময় হচ্ছে যখন গত মাসে কংগ্রেসের এক শুনানিতে জেনারেল কুরিলা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে চমৎকার অংশীদার বলে প্রশংসা করেন এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ইসলামাবাদের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
এদিকে আসিম মুনির পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন— এমন জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে। যদিও এ গুঞ্জনকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ও আইএসপিআরের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক যে ঘনিষ্ঠতা, তাতে তার রাষ্ট্রপতি হতে তৎপরতার গুঞ্জন জোরালো হয়েছে আরও।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানে সেনাবাহিনী সব সময়ই প্রভাবশালী শক্তি। বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিচারব্যবস্থার বিতর্ক এবং নির্বাচন ঘিরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার পটভূমিতে সেনাপ্রধানের এই আন্তর্জাতিক সফর এবং দেশের ভেতরের রাজনৈতিক আলোচনাগুলো একসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের অল্প সময়ের ব্যবধানে দুবার যুক্তরাষ্ট্র সফর ভারতের নীতিনির্ধারকদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে অভিমত কূটনৈতিক মহলের। একসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘আমার বন্ধু’ বলে সম্বোধন করলেও সেই সম্পর্ককে দূরে ঠেলে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।