জুমবাংলা ডেস্ক : দলিল না থাকলেও আপনি জমির মালিক হতে পারেন—শুনে অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, বাংলাদেশে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য দলিল ছাড়াও পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বা প্রমাণ থাকলেই আইনি স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব। সুপ্রিম কোর্টের রায় ও বর্তমান ভূমি ব্যবস্থাপনার আলোকে এই সুযোগ এখন বাস্তব।
Table of Contents
দলিল হারিয়ে গেলেও ভয় নেই
অনেক সময় দেখা যায় জমির দলিল হারিয়ে যায়, পুড়ে যায় বা শত্রুতাবশত নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি কখনো তা করা হয় পারিবারিক বিরোধের জেরে। এই অবস্থায় চিন্তার কিছু নেই—যদি আপনি নিচের ৫টি মূল প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেন, তাহলে আপনি আইনত জমির প্রকৃত মালিক বলে বিবেচিত হবেন।
জমির মালিকানা দাবি করার জন্য ৫টি মূল প্রমাণ
১. খতিয়ান (CS, SA, RS, BS ইত্যাদি)
সরকার পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী জমির মালিকানা, দাগ নম্বর, পরিমাণ, সীমানা, খাজনা প্রভৃতি তথ্যসহ নথিপত্র। এটি ঐতিহাসিক মালিকানার প্রথম ও প্রধান প্রমাণ।
২. নামজারি/খারিজ (Mutation Record)
ক্রয় বা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া জমি নিজের নামে রেকর্ডভুক্ত করতে হয়। এতে সরকারি খতিয়ানে আপনার নাম উঠে আসে।
৩. ভোগদখলের প্রমাণ
আপনি বা আপনার পরিবার জমি কত বছর ধরে চাষ করছেন বা বসবাস করছেন, সেই ব্যবহারই প্রমাণ করে জমির উপর অধিকার। আইনি ভাষায় এটিই প্রকৃত, গঠনমূলক ও যৌথ দখলের স্বীকৃতি।
৪. খাজনার রশিদ (Tax Receipt)
নিয়মিত খাজনা পরিশোধ জমির আইনি মালিকানার বড় প্রমাণ। বর্তমানে অনলাইনেও খাজনা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করা সম্ভব।
৫. ডিসিআর (Duplicate Carbon Receipt)
দলিল ছাড়াও নামজারির ভিত্তিতে ডিসিআর পাওয়া যায়, যা জমির সরকারি রেকর্ডে মালিকানা পরিবর্তনের বৈধ দলিল হিসেবে কাজ করে।
নাম না থাকলেও বাটোয়ারায় অধিকার থাকবে
পরিবারে জমি বণ্টন না হলে এবং পূর্বপুরুষদের দখলে জমি থাকলে, রেকর্ড একাধিক ভাইয়ের নামে থাকলেও অন্য ভাই-বোনরা আইনি অধিকার পাবে। এ ক্ষেত্রে বাটোয়ারা মামলা করলে আইনি অংশ আদায় সম্ভব।
অতিরিক্ত দলিল ও হলফনামা যেগুলো দরকার হতে পারে
- জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট
- নাম সংশোধনের হলফনামা
- ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা
- বিবাহ/তালাক সম্পর্কিত হলফনামা
- কোড ম্যারেজ বা যৌথ বিবাহের হলফনামা
যেকোনো হলফনামা বা এফিডেভিট নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আইনগত পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক
আপনার কাছে দলিল না থাকলেও যদি এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র—খতিয়ান, নামজারি, ভোগদখল, খাজনা রশিদ ও ডিসিআর—থাকে, তাহলে আপনি আইন অনুযায়ী জমির বৈধ মালিক হিসেবে বিবেচিত হবেন।
তবে সব সময় মনে রাখতে হবে, ভূমি সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে আইনগত পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
জমির মালিকানা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকলে ভূমি অফিস, আইনজীবী বা স্থানীয় এসিএল (সহকারী কমিশনার-ভূমি) এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।