বিনোদন ডেস্ক : “এই উত্তর আমি দেব না, এই প্রশ্নের উত্তর রহস্যই থাক। মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াক যুগ যুগ ধরে।”
কলকাতার নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় উপহার দিতে থাকেন একের পর এক ব্যবসা সফল সিনেমা। তৈরি হয় নতুন জুটি।
এই জুটি ছাড়া সিনেমার কথা ভাবতেও পারতেন না তখনকার সফল নির্মাতারা। পর্দা এবং পর্দার বাইরে দুজনের সম্পর্কের রসায়নও ছিল দারুণ। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই জুটিকে ঘিরে দর্শকদের অন্যতম প্রশ্ন–দুজনের সেই সম্পর্ক কি স্রেফ বন্ধুত্বের? নাকি অন্য কিছু?
নির্মাতা কৌশিক গাঙ্গুলি পরিচালিত ‘অযোগ্য’ সিনেমা নিয়ে আগামী মাসে দর্শকদের সামনে আসছেন প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা। আর এই সিনেমা দিয়ে তিন দশকের ক্যারিয়ে জুটি বেঁধে ‘হাফ সেঞ্চুরি’ করতে চলেছেন তারা। তাই সেই ‘অন্য কিছু’ সংক্রান্ত চর্চিত প্রশ্ন ও কৌতুহল ফের জেগেছে নতুন করে।
এই প্রশ্ন নিয়ে কলকাতার সংবাদমাধ্যম টিভি নাইন বাংলা হাজির হয় ঋতুপর্ণার কাছে।
সত্যি প্রেম করতেন? ঋতুপর্ণার ধোঁয়াশা মাখা উত্তর, “লোকে তো তাই মনে করতেন। তবে আমি বলব ২৪ ঘণ্টা একটা মানুষের সঙ্গে থাকলে, কাজ করলে, একটা ভালবাসা, নির্ভরতা তো তৈরি হয়। তবে কি এই ভালবাসা প্রেম নয়? এই উত্তর আমি দেব না, এই প্রশ্নের উত্তর রহস্যই থাক। মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াক যুগ যুগ ধরে।”
টালিগঞ্জে সেভাবে আর ‘জুটি’ কেন তৈরি হচ্ছে না? ঋতুপর্ণার ভাষ্য, “একটি জুটি প্রচুর পরিশ্রমের ফসল। এখন কোথাও গিয়ে যেন আত্মরিকতার অভাব। হৃদয়টা থাকছে না।”
প্রসেনজিতের সঙ্গে জুটির রহস্য কী ছিল? ঋতুপর্ণার উত্তর, ” প্রচুর মানুষের আশীর্বাদ ও ভালোবাসা পেয়েছি আমরা। দর্শকদের দেখেছি তো, তারা কাঁদছেন, হাত দিয়ে ছোঁয়ার জন্য ডাকছেন। এটা রাতারাতি তৈরি হতে পারে না। সেখানে তো আমাদেরও শতভাগ কমিটমেন্ট রয়েছে কাজের প্রতি। শুধুমাত্র হোডিং, পোস্টারে সেটা অর্জন করা যায় না। কাজের প্রতি ভালবাসাটাই আসল। এত বছরেও এই কমিটমেন্টটা কখনও নষ্ট হয়নি।”
‘নাগপঞ্চমী’ সিনেমায় ১৯৯৪ সালে প্রথম পর্দায় আসেন প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা। তাদের প্রথম সিনেমা ‘হিট’ হয়। এরপর ‘মায়ার বাঁধন’, ‘বাবা কেন চাকর’সহ একাধিক সিনেমায় দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন তারা।
তবে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ সিনেমা করার পর মনোমালিন্য, মান-অভিমানের জের ধরে টানা ১৪ বছর তাদের একসঙ্গে দেখা যায়নি।
এরপরে ২০১৬ সালে নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘প্রাক্তন’ সিনেমায় নতুন আঙ্গিকে দর্শকের সামনে হাজির হয় এ জুটি। এর দুবছর পর কৌশিক তার ‘দৃষ্টিকোণ’ সিনেমায় সুপারহিট জুটিকে আবার ফিরিয়ে আনেন। এবার তার কৌশিকের নির্মাণে আসছেন ‘অযোগ্য’ নিয়ে।
প্রসেনজিতের সঙ্গে জুটি ভাঙায় কি জীবনে শূন্যতা নেমেছিল?
ঋতুপর্ণার উত্তর, ” না, সেভাবে নয়, তবে সংগ্রামটা ছিল।”
ঋতুপর্ণার কথায়, “সংগ্রাম আগেও ছিল, এখনও রয়েছে। তবে একসঙ্গে কাজ করার সংগ্রামের সংজ্ঞাটা একটু অন্য ছিল। তখন একসঙ্গে প্রচুর কাজ করা হত। সকাল থেকে রাত হয়ে, কখন যে ভোর হয়ে যেত বুঝতেই পারতাম না। সেখানে কোনো মেকআপ ভ্যান নেই…। আজ সময়টা অনেক পাল্টে গেছে।”
‘অযোগ্য’ মুক্তি পাবে আগামী ৭ জুন। ব্যাংককর্মী রক্তিম মজুমদার এবং তার স্ত্রী পর্ণার সংসার নিয়ে আটপৌরে বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্পে সিনেমা বানিয়েছেন কৌশিক।
রক্তিমের চাকরি চলে যাওয়ায় সংসারের সমীকরণ হঠাৎ বদলে যায়। পরিস্থিতি কঠিন হয়, রক্তিমকে বাড়িতে থাকতে হয় এবং সন্তানের দেখাশোনাও করতে হয়। এদিকে সাংসার চালাতে পর্ণাকে কাজ নিতে হয় ইনভেস্টমেন্ট ফার্মে। এরই মাঝে তাদের জীবনে এসে হাজির হয় প্রসেন নামের এক ব্যক্তি। ছবির নতুন পোস্টার এসেছে রোববার। সিনেমাটি প্রযোজনা করছে সুরিন্দর ফিল্মস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।