কুহেলী রহমান : নিত্যসঙ্গী মোবাইল ফোন আদতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের ভান্ডার। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধের সংখ্যা। এই সাইবার অপরাধের হাত থেকে এখন আর অতিব্যক্তিগত এই ডিভাইসও সুরক্ষিত নেই। এদের হাত থেকে বাঁচতে গোড়াতেই প্রয়োজন সাবধান হওয়া। স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি জিনিস বিবেচনায় রাখা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই জরুরি। তাতে কমতে পারে তথ্য চুরি যাওয়ার ঝুঁকি।
ফোনে থাকুক তালা
প্যাটার্ন কিংবা পাসওয়ার্ড দিয়ে মোবাইল ফোন সব সময় লক করে রাখুন। প্রয়োজন হলে অ্যাপ লকও ব্যবহার করতে পারেন। বেশি দিন এক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। মাঝেমধ্যে পাসওয়ার্ড বা প্যাটার্ন লক বদলে ফেলুন।
ডিভাইস এনক্রিপ্ট করুন
ডেটা এনক্রিপশন করলে ফোনের গতি কিছুটা কমে যেতে পারে। তারপরও আপনার তথ্য সুরক্ষিত রাখতে অ্যান্ড্রয়েডের সিকিউরিটি সেটিংস থেকে ডেটা এনক্রিপ্ট করে রাখুন।
এতে মোবাইল ফোন বা ট্যাব প্রতিবার চালু করার সময় ডেটা বা তথ্যে ঢুকতে আলাদা করে পাসওয়ার্ড ও পিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এনক্রিপশন করা থাকলে ফোন যদি দুর্বৃত্তদের হাতে পড়ে এবং একবার বন্ধ করে তা আবার চালু করে, তবে পিন বা পাসওয়ার্ড ছাড়া তথ্য চুরি করতে পারবে না।
যেখানে-সেখানে থেকে অ্যাপ ডাউনলোড নয়
অ্যান্ড্রয়েডের জন্য গুগলের প্লে স্টোরের অ্যাপগুলোই ডাউনলোড করুন। গবেষকেরা পরামর্শ দিয়েছেন, কেবল উৎস নিশ্চিত হয়ে এবং পরিচিত প্ল্যাটফর্ম থেকেই অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করুন। কোনো অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করার আগে আপনার অনুমতি চাওয়া হচ্ছে কি না, তা খেয়াল করুন এবং অনুমতি দেওয়ার আগে অ্যাপটির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
ডেটার ব্যাকআপ রাখুন
সব সময় মোবাইল ফোনের ডেটা ব্যাকআপ রাখা ভালো। তবে যেখানে-সেখানে নয়, গুগল ড্রাইভ বা আপনার ব্যক্তিগত ল্যাপটপে সেভ করে রাখুন সব তথ্য। মোবাইল ফোন বেহাত হলেও যাতে তথ্য নিয়ে সমস্যায় পড়তে না হয়। সিকিউরিটি পাসওয়ার্ড ছাড়া খুব ব্যক্তিগত কোনো তথ্য মোবাইল ফোনে ফেলে রাখবেন না।
ফোন রুট করবেন না মোবাইল ফোন রুট করা হলে কাস্টম অ্যান্ড্রয়েড রমের পাশাপাশি ক্ষতিকর অ্যাপও ইনস্টল হয়ে যেতে পারে। রুট অ্যাকসেস সুবিধার অ্যাপ পণ্যের ফাইল সিস্টেমকে অন্যান্য ক্ষতিকর অ্যাপের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারে।
সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখুন
মোবাইল ফোন সফটওয়্যার আপডেট রাখুন। প্রতিবার আপডেটে বেশ কিছু নিরাপত্তা প্যাচ দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো।
কাউকে দেওয়া যাবে না ব্যক্তিগত তথ্য
অনলাইন ব্যাংকিং আইডি, পাসওয়ার্ড বা ডেবিট কার্ডের নম্বর বা পিন কখনোই কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
এসডি কার্ডে স্পর্শকাতর তথ্য নয়
কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ যদি করতেই হয়, তবে তা ইন্টারনাল মেমোরিতেই করুন। মোবাইল ফোনের এসডি কার্ডে ব্যক্তিগত কিংবা আর্থিক তথ্য জমা রাখার বিষয়ে সতর্ক থাকুন। এসডি কার্ডের তথ্য মুছে ফেলা এবং হাতিয়ে নেওয়া সহজ বলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণে এসডি কার্ডে ভরসা না করাই ভালো।
অফিসের কাজে নিজের ডিভাইস নয়
নিজের ডিভাইস যদি অফিসের কাজে ব্যবহার করতে হয়, তবে অফিসের তথ্যপ্রযুক্তি দল বা কর্মকর্তাদের কাছে পরামর্শ নিন এবং তাঁদের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য আপনার ফোনে জমা রাখুন। মনে রাখবেন, অফিসের কাজে নিজের ডিভাইসটি ব্যবহার করার সময় ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন না থাকার কারণে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ভাইরাস আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।